সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিজের দলেই আরও কোণঠাসা উদ্ধব ঠাকরে। দলের বিধায়কদের আবেগঘন বার্তা দিয়ে, দল চাইলে ইস্তফা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও দলে ভাঙন ঠেকাতে পারছেন না মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, আরও ৬ শিব সেনা (Shiv Sena) বিধায়ক বুধবার রাতে গিয়ে যোগ দিয়েছেন শিণ্ডে শিবিরে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ তাঁদের, ‘হাইজ্যাক’ করে গুয়াহাটি নিয়ে গিয়েছে বিজেপি। ফলে আরও চাপ বেড়েছে শিব সেনার উপর।
সরকারের অস্তিত্ব সংকটে। আর এই সময়ে ফের সরকার বাঁচাতে ও রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা ফেরাতে মাঠে নেমেছেন মহারাষ্ট্রের ‘লৌহমানব’ শরদ পাওয়ার (Sharad Pawar)। সরকার বাঁচাতে মরিয়া হয়ে তিনি বিদ্রোহী সেনা নেতা একনাথ শিণ্ডেকেই (Eknath Shinde) মুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছেন। পাওয়ারের চালকে সমর্থন করে রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন সপরিবারে ত্যাগ করে নিজের বাড়ি মাতোশ্রীতে ফিরে গিয়েছেন উদ্ধব। রাতে স্ত্রী ও পুত্রকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘বর্ষা’ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ‘মাতশ্রী’ যাওয়ার পথে মুম্বইয়ের রাস্তায় হাজার হাজার শিব সৈনিককে নামিয়ে ক্ষমতা প্রদর্শনও করেছেন। বিজেপি আবার অভিযোগ করেছে, করোনা (Coronavirus) আক্রান্ত উদ্ধব ওই সময় হাজার হাজার সমর্থকের সঙ্গে দেখা করে কোভিড বিধি ভঙ্গ করেছেন। যদিও শিব সেনা সূত্রের খবর, গতকাল বিকেলেই তাঁর RT-PCR রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
[আরও পড়ুন: দাবি পালটা দাবিতে সরগরম মহারাষ্ট্র, এনসিপি-কংগ্রেসের সঙ্গ ছাড়ুন, উদ্ধবকে শর্ত শিণ্ডের]
কিন্তু, শিণ্ডে-সহ শিব সেনার ৩৫ বিধায়ক গুয়াহাটিতে কার্যত বিজেপির (BJP) হাতে বন্দি। বিজেপি রাতেই শিণ্ডেকে উপমুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে। অর্থাৎ, শিণ্ডেকে মুখ্যমন্ত্রীর টোপ দিয়ে পাওয়ার-ঠাকরেরা যে পালটা চাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তা সফল হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। শিণ্ডেকে যে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার তোপ দিয়ে ফেরানো যাবে না, সেটা বুঝতে পেরেই সম্ভবত শিব সেনা নেতা সঞ্জয় রাউত এদিন সকালে স্পষ্ট করে দিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে ইস্তফা দেবেন না।
[আরও পড়ুন: আগামী সোমবার ফের ব্যাংক ধর্মঘট, সপ্তাহের শুরুতেই গ্রাহকদের ভোগান্তির আশঙ্কা]
কিন্তু সরকার বাঁচানোটা এখন সত্যিই বড় চ্যালেঞ্জ সেনার কাছে। কারণ যে ৬ বিধায়ক রাতে গুয়াহাটির হোটেলে গিয়ে উঠেছেন, তারাও যদি শিণ্ডের সঙ্গেই হাত মেলান তাহলে শিণ্ডের নেতৃত্বাধীন শিব সেনা বিধায়ককের সংখ্যা দাঁড়াবে ৪১। দলত্যাগ বিরোধী আইন এড়িয়ে ৫৬ বিধায়কের শিব সেনা পরিষদীয় দল ভাঙার জন্য ৩৭ জন বিধায়ক প্রয়োজন। সেই সংখ্যাটা জোগাড় করেই ফেলেছেন শিণ্ডে। এবার যদি তিনি দাবি করেন, ঠাকরেরা নন, তিনিই শিব সেনার আসল নেতা, সেটিই আইন অনুযায়ী মেনে নিতে বাধ্য থাকবেন রাজ্যপাল। শুধু তাই নয়, শিণ্ডে যদি নির্বাচন কমিশনে মামলা করেন, তাহলে শিব সেনার প্রতীকের অধিকারও তিনিই পেয়ে যেতে পারেন। যদিও বিরোধী জোট বা শিণ্ডে কেউই এই মুহূর্তে অতদুর ভাবছে না। শিণ্ডে শিবির আপাতত চাইছে এনসিপি-কংগ্রেসের (Congress) জোট ছেড়ে শিব সেনা ফিরে আসুক বিজেপির সঙ্গে।