সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পোর্শেকাণ্ডে প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর নাবালককে আড়াল করতে তৎপর হন খোদ মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পওয়ার। ঘটনার পর পুনের পুলিশ কমিশনারকে মাঝরাতে ফোন করেন তিনি। তদন্তে নেমে তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনায় পুরোদমে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চালানো হয় পুলিশি তদন্তের উপর। শুধু উপমুখ্যমন্ত্রী নন, পুলিশের উপর প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চালান আরও ২ বিধায়ক।
মদ খেয়ে পুনের রাস্তায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালিয়ে ২ জনকে হত্যার অভিযোগে সেই রাতে পুলিশ অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে আসে ঠিকই, তবে রীতিমতো জামাই আদর করে তাকে রাখা হয়। খেতে দেওয়া হয় পিৎজা। এই ঘটনার তদন্তে জানা যায়, সেই রাতেই অজিত পওয়ার ফোন করেন পুলিশ কমিশনারকে। উপমুখ্যমন্ত্রীর তরফে নাকি নির্দেশ দেওয়া হয়, অভিযুক্তের সঙ্গে যেন কোনও দুর্ব্যবহার না করে পুলিশ। পওয়ারের নির্দেশের পরই সতর্ক হয়ে যায় প্রশাসন। তবে উপমুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠার পর অজিত পওয়ার নিজেও স্বীকার করে নেন, ফোন তিনি করেছিলেন। তবে তাঁর দাবি, অভিযুক্তকে বাঁচানোর জন্য নয়। কমিশনারকে জানিয়েছিলেন, অভিযুক্ত অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তির ছেলে। ফলে সতর্কভাবে কাজ করার জন্য।
[আরও পড়ুন: স্কুলপাঠ্যে মনুসংহিতা! বিতর্কের মাঝেই মুখ খুললেন মহারাষ্ট্রের শিক্ষামন্ত্রী]
ঘটনা এখানেই শেষ নয়, সেদিন রাত ৩টে নাগাদ ওই থানায় পৌঁছে যান সুনীল তিংড়ে নামের শাসকদলের এক বিধায়ক। পুলিশ যাতে অভিযুক্তকে ছেড়ে দেয় তার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন তিনি। ফলে এক দিকে উপমুখ্যমন্ত্রীর ফোন অন্যদিকে বিধায়কের থানায় হাজিরা, সব মিলিয়ে স্থানীয় থানার পুলিশ বুঝে যান অভিযুক্ত রীতিমতো রাঘববোয়াল। যার জেরেই থানায় অভিযুক্তের খাতির-যত্নে কোনও খামতি রাখেনি পুলিশ।
এদিকে দুর্ঘটনার পর নাবালককে বাঁচাতে গাড়ির ড্রাউভারের উপর দোষ চাপাতে চেয়েছিল গোটা পরিবার। তারা চেয়েছিল, গোটা ঘটনার দায় নিক পোর্শে গাড়ির চালক। তাঁর ফোন কেড়ে নিয়ে একটি বাংলোয় আটকে রেখেছিলেন নাবালকের বাবা ও দাদু। চালককে বলা হয়, দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর দায় নিজের কাঁধে নিয়ে নিতে হবে। তবে সময়মতো পুলিশি হেফাজত থেকে ছাড়িয়ে নেওয়া হবে বলেও চালককে আশ্বাস দেয় নাবালকের পরিবার। নাবালকের রক্তের নমুনা বদলের চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। যাতে দেখানো যায় অভিযুক্ত মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন না। চালককে অপহরণের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল নাবালকের দাদুকে। দুই চিকিৎসককেও গ্রেপ্তার করা হয়। এবার প্রকাশ্যে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।