সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়ংকর কাণ্ড মহারাষ্ট্রে। ধাঙড় সমাজের সংরক্ষণের বিরোধিতায় সচিবালয়ের তিনতলা থেকে ঝাঁপ দিলেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা এনসিপি বিধায়ক নরহরি জিরওয়াল। পাশাপাশি ঝাঁপ দিলেন বিজেপির আদিবাসী সাংসদ হেমন্ত সাভ্রা ও বিধায়ক কিরান লাহামাতে-সহ বেশ কয়েকজন। সচিবালয়ের নির্মীয়মাণ বিল্ডিংয়ের নিচে নিরাপত্তা স্বরূপ বিছিয়ে রাখা জালে আটকে যান তারা। শেষে তাঁদের উদ্ধার করে পুলিশ।
সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ধাঙড় গোষ্ঠীর ভোটকে গুরুত্ব দিয়ে তাদের তপসিলি জনজাতি (এসটি) সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একনাথ শিন্ডের সরকার। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নামেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের সাংসদ বিধায়করা। শুক্রবার সকালে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দিতে সচিবালয়ের তিন তলা থেকে ঝাঁপ দেন নরহরি জিরওয়াল। তাঁর দেখাদেখি ঝাঁপ দেন আরও সাংসদ হেমন্ত সাভ্রা ও বিধায়ক কিরান লাহামাতে, হিরামন খোসকার, রাজেশ পাটিল। নিচে নিরাপত্তা স্বরূপ বিছানো থাকায় বড় কোনও দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পান তাঁরা। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হয় পুলিশ। উদ্ধার করা হয় বিধায়ক সাংসদদের। এই ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল শুরু হয়েছে। জানা যাচ্ছে, জোট সরকারের সাংসদ-বিধায়কদের ক্ষোভ মেটাতে তাঁদের সঙ্গে আজই বৈঠকে বসতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, মূলত পশ্চিম মহারাষ্ট্র এবং মরাঠাওয়াড়া অঞ্চলে বসবাস করেন ধাঙড় গোষ্ঠীর মানুষ। বিগত কয়েক বছর ধরে তফসিলি জনজাতির তকমা চেয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের দাবি পূরণ না হলে আসন্ন নির্বাচনে কেউ শিন্ডের সরকারকে ভোট দেবেন না। এই অবস্থায় ধাঙড় সম্প্রদায়কে খুশি করতে তাঁদের দাবি মানার পথে হাঁটে সরকার। তবে তাতে জোট সরকারের অন্দরেই বিদ্রোহ শুরু হয়।
অভিযোগ, গত বুধবার এই ইস্যুতে নরহরি জিরওয়াল-সহ বেশ কয়েকজন আদিবাসী বিধায়ক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। তবে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও মুখ্যমন্ত্রীর দেখা পাননি বিধায়করা। এই অবস্থায় তাঁদের ক্ষোভ আরও চরম আকার ধারন করে। যার জেরেই এদিন বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে তিনতলা থেকে ঝাঁপ দেন তাঁরা। তবে শুধু বিধায়ক বা সাংসদ নন, এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় পথে নেমেছেন মহারাষ্ট্রের আদিবাসীরাও। গত ৩০ সেপ্টেম্বর গোন্দিয়া শহরে মিছিল করে আদিবাসী সংগঠনগুলি। জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা করে তাঁরা জানান, ধাঙড় সম্প্রদায়কে উপজাতই তকমা দিলে রাজ্যের আদিবাসীর প্রতি অন্যায় করা হবে।