সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিল্লির রাজপথের নাম পালটে ‘কর্তব্য পথ’ রাখার কেন্দ্রীয় পরিকল্পনার কথা সামনে আসতেই মোদি সরকারকে (Modi government) খোঁচা তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra)। মঙ্গলবার টুইটারে তিনি পোস্ট করেছেন, ‘রাজপথের নাম কর্তব্য পথ করা হচ্ছে বলে আমি জানতে পেরেছি। আমার আশা, ওরা প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবনের নাম দেবে কিংকর্তব্যবিমূঢ় মঠ।’ সেই সঙ্গে সুকুমার রায়ের কালজয়ী সৃষ্টি ‘হযবরল’ থেকে একটি অংশও উদ্ধৃত করেছেন তিনি।
সুকুমারের ওই কাহিনিতে হিজবিজবিজের নামের এক চরিত্র অদ্ভুত সব কথা ভেবে হেসে গড়িয়ে পড়ত। তারই এমন এক বিচিত্র সংলাপকে বিজেপি তথা মোদি সরকারকে কটাক্ষ করতে সুকৌশলে ব্যবহার করেছেন মহুয়া। সেই সংলাপে হিজবিজবিজকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘একজনের মাথার ব্যারাম ছিল, সে সব জিনিসের নামকরণ করত। তার জুতোর নাম ছিল অবিমৃষ্যকারিতা, তার ছাতার নাম ছিল প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, তার গাড়ুর নাম ছিল পরমকল্যাণবরেষু— কিন্তু যেই তার বাড়ির নাম দিয়েছে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অমনি ভূমিকম্প হয়ে বাড়িটাড়ি সব পড়ে গিয়েছে।’
[আরও পড়ুন: ধানবাদের স্বর্ণ ঋণ প্রদানকারী সংস্থায় ডাকাতের হানা, পুলিশের এনকাউন্টারে মৃত ১ দুষ্কৃতী]
ব্রিটিশ আমলে কিংসওয়ে নামে পরিচিত ছিল রাজপথ। এবার এই নামটিকে পালটে ‘কর্তব্য পথ’ করে এর গায়ে লেগে থাকা ঔপনিবেশিক গন্ধটা পুরোপুরি মুছে ফেলতে চাইছে কেন্দ্র। সম্প্রতি এক ভাষণে একথা জানিয়েছেনও মোদি। বিষয়টি সামনে আসতেই কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়ার এই টুইট। এর আগে সোমবারও এই বিষয়ে টুইট করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেখানেও বিজেপি সরকারকে খোঁচা মেরে তিনি লিখেছিলেন, ”কী হচ্ছে এসব? আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের ঐতিহ্যকে বদলে একনায়কত্বের পাগলামিতে ভর করে ইতিহাসের পুনর্নির্মাণ করার কর্তব্য কি বিজেপি একাই পালন করতে চায়?”
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ঔরঙ্গজেব রোডের নাম বদলে এপিজে আবদুল কালামের নামে রেখেছিল বিজেপি। পরের বছর রেস কোর্স রোডের নাম পালটে রাখা হয় লোককল্যাণ মার্গ। একই ভাবে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে ডালহৌসি রোড ও তিনমূর্তি চকের নাম বদলে রাখা হয় যথাক্রমে দারা শুকো রোড ও তিনমূর্তি হাইফা চক। এভাবেই লাগাতার রাজধানীর নানা স্থানের নাম বদলে চলেছে বিজেপি। অন্যান্য রাজ্যেই একই প্রবণতা লক্ষণীয়। আর সেই ধারাতেই নয়া সংযোজন রাজপথের এই নতুন নাম রাখার পরিকল্পনা।