আকাশ মিশ্র: ক্রাইম ড্রামা দেখার একটা মজা রয়েছে। সাধারণত, প্রথম এপিসোডেই অপরাধ ঘটে যায়, তারপর প্রত্যেক এপিসোডে টুইস্টের মজা আর তার সঙ্গে অপরাধের নেপথ্যে থাকা কারণ গুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠা। নেটফ্লিক্সে সদ্য মুক্তি পাওয়া ওয়েব সিরিজ ‘মাই’ (Mai Series Review) ঠিক এই ছকেই এগানোর চেষ্টা করেছে। এ ব্যাপারে এই সিরিজ কিছু ক্ষেত্রে সফল, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেও বেশ একঘেঁয়ে।
বিশদে বলার আগে, একটু অন্য বিষয় টানা যাক। ২০১৭ সালে শ্রীদেবী অভিনীত ‘মম’ মুক্তি পেয়েছিল। ছবিতে মেয়ের ধর্ষকদের প্রাণ নিয়ে প্রতিশোধ নিয়েছিলেন শ্রীদেবী। ঠিক এরকমই গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছিল রবিনা ট্যান্ডনের কামব্যাক ছবি ‘মাতৃ’। সেখানেও মেয়ের হয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে ছিল এক মা। এই সিরিজ দেখলে এই ছবি দুটোর কথা মাথায় আসতে বাধ্য। তবে যদি গল্প বলার ছন্দে একটু নতুনত্ব রাখতেন ছবির পরিচালক অনশাই লাল ও অতুল মোঙ্গিয়া তাহলে হয়তো সিরিজটা জমে যেত। কারণ, এই সিরিজের প্রথম তিনটে এপিসোডে সেই সম্ভাবনা ছিল।
[আরও পড়ুন: মুক্তির দিনই ১৩৪ কোটি টাকার ব্যবসা, কেমন হল ‘কেজিএফ চ্যাপ্টার ২’, পড়ুন রিভিউ ]
গল্প শুরু হয় সুপ্রিয়া নামের একটি মেয়ের গাড়ি দুর্ঘটনা দিয়ে। সুপ্রিয়া কথা বলতে পারে না। সে মূক। মায়ের সামনেই গাড়ি চাপা পড়ে সে। আপাতদৃষ্টিতে এটি দুর্ঘটনার মতো লাগলেও, সুপ্রিয়ার মৃত্যর পিছনে যে এক রহস্য রয়েছে তা গল্প এগোলেই ধরা পড়ে। সেই রহস্যের সমাধান করতে গিয়েই একের পর এক অপরাধ করে বসে সুপ্রিয়ার মা। গল্পের মধ্যে ঢুকে পরে চিকিৎসা জগতের জালিয়াতির মতো বিষয়।
‘মাই’ সিরিজের প্রথম সিজন অনেকগুলো প্রশ্ন রেখে শেষ হয়। যা কিনা দ্বিতীয় সিজনের জন্য আগ্রহ তৈরি করে। তবে এই সিরিজের সমস্যা হল, এপিসোড গুলোর গতি বেশ ধীর। কারণ, ক্রাইম ড্রামাতে গতি যদি শ্লথ হয়ে পড়ে আগ্রহ ধরে রাখা কঠিন হয়ে যায়। কিছু দৃশ্য বেশ দুর্বলভাবে দেখানো হয়েছে। বিশেষ করে, সুপ্রিয়ার মায়ের হাতে প্রথম খুনের দৃশ্য ও প্রমাণ লোপাট।
অভিনয়ের দিক থেকে সাক্ষী তনওয়ার বেশ ভাল। মেয়েকে হারানোর যন্ত্রণা তাঁর চোখেমুখে। ভাল লাগবে রাইমা সেনকেও। সুপ্রিয়ার বয়ফ্রেন্ড অঙ্কুর রতন নজর কাড়বে। ভাল লাগবে, বিবেক মুসরান, অনন্ত বিধান্ত, প্রশান্ত নারায়ণ, ওমিকা গব্বি, সীমা পাওয়াকেও। তবে এই সিরিজ একেবারেই সাক্ষী তনওয়ারের জন্য। নিজের সমস্তটা ঢেলে দিয়েছেন সাক্ষী। তবে চিত্রনাট্য আরেকটু শক্তপোক্ত হলে জমে যেত এই সিরিজ।