অর্ণব আইচ: কুড়ি বছর ধরে তাঁর ঠিকানা হয়ে দাঁড়িয়েছিল গড়িয়াহাটের (Gariahat) অভিজাত এলাকা – ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনস। হয়ে উঠেছিলেন পরিবারেরই সদস্য। রবিবার আচমকা বহুতল আবাসনের ৯ তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হল সেই পরিচারিকার। প্রণতি মণ্ডল নামে পরিচারিকার এহেন মর্মান্তিক মৃত্যুতে আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা (Unnatural death case) রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে এ নিয়ে রহস্যও ঘনাচ্ছে।
গত ২০ বছর ধরে ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনসের দশতলা অভিজাত আবাসনের এক বৃদ্ধ দম্পতির দেখাশোনা করতেন প্রণতি। ছিলেন তাঁদেরই পরিবারের সদস্যের মতো। গেরস্থালির যাবতীয় কাজকর্মের জন্য তাঁর উপরই নির্ভরশীল ছিলেন ওই দম্পতি। সব ঠিকঠাকই চলছিল। কিন্তু রবিবার দুপুর নাগাদ হঠাৎই সব এলোমেলো হয়ে গেল। পুলিশ জানতে পেরেছে, ন’তলার ফ্ল্যাটের বারান্দায় জামাকাপড় শুকোতে দিচ্ছিলেন প্রণতি। সেসময় তিনি আচমকাই পড়ে যান নিচে। প্রচণ্ড শব্দ পেয়ে আবাসনের নিরাপত্তা রক্ষীরা ছুটে দিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন মধ্যবয়সী ওই মহিলা। তাঁকে দেখে চিনতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হয়নি তাঁদের।
[আরও পড়ুন: শেষের পথে মাঝেরহাট ব্রিজ নির্মাণের কাজ, খুব দ্রুতই উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী]
সঙ্গে সঙ্গে খবর পাঠানো হয় গড়িয়াহাট থানায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রণতির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। যে ফ্ল্যাটে পরিচারিকার কাজ করতেন তিনি, সেই বৃদ্ধ দম্পতিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ জানতে পারে, প্রণতির মৃগীরোগ ছিল। এই রোগে সাধারণত আচমকাই খিঁচুনি উঠে জ্ঞান হারান রোগী। হয়ত প্রণতির ক্ষেত্রেও তেমনই হয়েছিল। জামাকাপড় শুকোতে দেওয়ার সময়ে ব্যালকনির ওই অংশ পিছল হয়েছিল, যার ফলে তিনি জ্ঞান হারানোর পরে একেবারে নিচে পড়ে যান। তেমনই অনুমান করছে পুলিশ। যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই স্পষ্ট হবে প্রণতির মৃত্যুর কারণ।
[আরও পড়ুন: লোকাল ট্রেনে ভিড় নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের কী ভূমিকা, আজ বৈঠকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপাররা]
তবে অত উঁচু থেকে আচমকা এভাবে পড়ে যাওয়ার মধ্যে খুব একটা স্বাভাবিকত্ব দেখছেন না আবাসিকদের একাংশ। ফলে ঘনিয়ে উঠছে রহস্য। প্রণতির আসল বাড়ি কোথায়, পরিবারে কে রয়েছেন, সেসবের খোঁজ করছে পুলিশ।