সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পাঁচ দিনের মাথায় রেলশহর আদ্রায় তৃণমূল নেতা খুনের কিনারা। মূল ষড়যন্ত্রকারী তথা রেলের সিন্ডিকেটের মাথাকে আগ্নেয়াস্ত্র সমেত গ্রেপ্তার করল পুলিশ। সিন্ডিকেটের ‘বখরা’ না পাওয়াতেই এই খুন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চলতি মাসের ২২ তারিখ সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ পুরুলিয়ার রেলশহর আদ্রার পুরাতন বাজারের কাছে তৃণমূলের কার্যালয়ে গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যান দলের আদ্রা শহর সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবে। গুলিবিদ্ধ হয়ে জখম হন তাঁর নিরাপত্তারক্ষীও। এই ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই পরিবারের তরফে অভিযোগ করা দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই খুনের মূল ষড়যন্ত্রকারী তথা কয়েক দশক ধরে চলা আদ্রা ডিভিশনের রেলের সিন্ডিকেটের মাথাকে গ্রেপ্তার করে বড়সড় সাফল্য পায় পুরুলিয়া জেলা পুলিশ।
[আরও পড়ুন: ভোটে কাজ চালাতে হবে ৩৩৭ কোম্পানি দিয়েই, জানাল কেন্দ্র, হাই কোর্টে রাজ্য নির্বাচন কমিশন]
জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম আরজু মালি। তার আদি বাড়ি বিহারের জামুই-এ। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তিনি ঝাড়খণ্ডের বোকারোতে থাকতেন। ওই শিল্প শহর থেকেই তিনি রেলের সিন্ডিকেট চালাতেন। তার কাছ থেকে একটি ৭.৬৫ এমএম পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিহারের জামুই থেকেই তাকে ট্র্যাক করা হয়। নিতুড়িয়ার ইনানপুরে মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাকে গ্রেপ্তার করে এই ঘটনায় গঠিত হওয়া সিটের সদস্যরা। বুধবার তাকে রঘুনাথপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আদ্রার খুনের ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী তথা রেলের সিন্ডিকেটের মাথাকে আগ্নেয়াস্ত্র সমেত গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও নানা তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ হত আদ্রা ও বোকারো থেকে। এই ডিভিশনে জোনাল টেন্ডার হয়। আগে এই সিন্ডিকেটের মাথা ছিল মুকুল শর্মা। তারপর জিতেন্দ্র পান্ডে হয়ে বর্তমানে-এর রাশ ছিল আরজু মালির হাতে। এছাড়া আরজু মালিকের হয়ে আদ্রাতে একাধিক জন কাজ করত। সেখানেই বাধা হয়ে গিয়েছিলেন নিহত তৃণমূল নেতা ধনঞ্জয় চৌবে। তাই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে পুলিশের দাবি। পুরুলিয়া জেলা পুলিশ জানিয়েছে, আরজু মালির সঙ্গে আদ্রার বেনিয়াশোলের বাসিন্দা ধৃত মহম্মদ জামালের আগে থেকেই পরিচিত ছিল। এরা দু’জনে মিলেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ধৃত আরজু মালির নামে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বেশ কয়েকবার জেলেও ছিল। একইভাবে জামালও কুখ্যাত দুষ্কৃতী। তার নামেও একাধিক মামলা রয়েছে।