সুকুমার সরকার, ঢাকা: অতিমারী করোনা ভাইরাসের (Coronavirus) প্রকোপে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কলকাতা-ঢাকা ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’। বন্ধ ছিল কলকাতা-খুলনার মধ্যে ‘বন্ধন’ এক্সপ্রেসও। দুই বছর পর, রবিবার ফের চালু হল কলকাতা-ঢাকা ও কলকাতা-খুলনার মধ্যেকার আন্তর্জাতিক রেলপথ দুটি। এদিন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’ (Maitree Express) ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। এর উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের ডিজি ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার। একইসঙ্গে কলকাতা থেকে খুলনার উদ্দেশে যাত্রা করেছে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’।
মৈত্রী এক্সপ্রেসে ৪৫৬টি আসন রয়েছে। আর ১৭০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ভারতীয় যাত্রীর সংখ্যা ১৬। আর একজন ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক। বাংলাদেশ (Bangladesh) রেলওয়ের ডিজি জানান, এখন থেকে ট্রেনটি সপ্তাহে পাঁচদিন চলাচল করবে। ঢাকা-কলকাতার দূরত্ব ৩৭৫ কিলোমিটার। এই রুটের যাত্রী প্রতি ট্রেন ভাড়া ট্রাভেল ট্যাক্স-সহ (৫০০ টাকা) এসি আসনের ভাড়া পড়বে ৩ হাজার ৫০৫ টাকা ও এসি চেয়ার কারের ভাড়া ২ হাজার ৫০৫ টাকা।
[আরও পড়ুন: গুমনামী বাবাই নেতাজি! নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে পরিবারের একাংশের চিঠি মোদিকে]
ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার জানান, দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ মার্চ থেকে মৈত্রী ও বন্ধন এক্সপ্রেসে যাত্রী পরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। এর একবছর পর মিতালী এক্সপ্রেস উদ্বোধন করা হলেও চালু হয়নি। গত এপ্রিল অবধি আকাশ ও সড়কপথে পুরোদমে যাতায়াত চালু হলেও ছিল রেল পরিষেবা বন্ধই ছিল। রেলওয়ের ডিজি জানান, প্রথম দিনে মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রী সংখ্যা ছিল অর্ধেকেরও কম। তবে ট্রেনে করে ভারতে যেতে পারায় আনন্দিত যাত্রীরা।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট রেলস্টেশনের ম্যানেজার লিটনচন্দ্র দে জানান, ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া শেষ করে সকাল আটটা ১৫ মিনিটে ট্রেনটি যাত্রা শুরু করেছে। বিকেল চারটেয় কলকাতা স্টেশনে পৌঁছবে এটি। সোমবার (৩০ মে) আবার কলকাতা থেকে যাত্রী নিয়ে বিকেল চারটেয় ঢাকা আসবে ট্রেনটি। তাঁর কথায়, ”পুজো, ইদের ছুটি এবং শীতকালে ট্রেনের সব আসনে যাত্রী থাকে। আর অন্যান্য সময় গড়ে ৩০০ আসনে যায় যাত্রী। এখন করোনা পরবর্তী সময়ে ট্রেনটি চালু হয়েছে। তাই যাত্রী কিছুটা কম। এটা ক্রমান্বয়ে বাড়বে।” রেলওয়ের অতিরিক্ত ডিজি (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলি জানান, ২৭ মাস বন্ধ থাকার পর ঢাকা-কলকাতা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস এবং একইদিন খুলনা-কলকাতা রুটে বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি চলাচল শুরু হল। মৈত্রীর যাত্রী শফিকুল ইসলাম বলেন, ”বাসযাত্রায় ভোগান্তি অনেক আর বিমানে তো বেশি খরচ হয়। তাই নিরাপদ ও সাশ্রয়ী মাধ্যম বলতেই আমার প্রথম পছন্দ ট্রেন।”
[আরও পড়ুন: আন্দোলনের আঁতুরঘর যাদবপুরের পড়ুয়াদেরই পছন্দ, ১০ জনকে কোটি টাকা চাকরির প্রস্তাব]
বাংলাদেশ থেকে বৃহস্পতিবার ও রবিবার – ২ দিন ছাড়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস। আর ভারত থেকে ফেরে দু’দিন। এদিকে রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর জানায়, মিতালী এক্সপ্রেসে ঢাকা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত এসি বার্থের ভাড়া ৪,৯০৫ টাকা। এসি সিটের ভাড়া ৩,৮০৫ টাকা। আর এসি চেয়ারের ভাড়া ২,৭০৫ টাকা।