সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইন্দোনেশিয়ায় মোদি-জিনপিংয়ের উষ্ণ করমর্দন বিশ্লেষকদের চায়ের কাপে তুফান তুলেছে। সেই জল্পনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাপানে ভারতীয় রণতরীর গর্জন। না, যুদ্ধ নয়। টোকিও উপসাগরে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া চালাচ্ছে ভারতীয় নৌসেনা। এর পোশাকি নাম ‘মালাবার’।
প্রায় তিন দশক ধরেই চলছে মালাবার (Malabar) মহড়া। সাগরে নকল যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করে রণকৌশল ঝালিয়ে নিতে এই মহড়া শুরু করেছিল আমেরিকা ও ভারত। পরে তাতে যোগ দেয় অস্ট্রেলিয়া ও জাপান। এনিয়ে গোড়া থেকেই চিন অভিযোগ করে আসছে যে, তাদের নজরে রেখেই সমুদ্রে চক্রব্যূহ রচনা করছে এই চার দেশ। বিশ্লেষকদের মতে, দক্ষিণ চিন সাগর ও ভারত মহাসাগরে লালফৌজকে অস্বস্তিতে ফেলেছে মালাবার নৌমহড়া। কারণ, একসঙ্গে এই চার মহাশক্তির সঙ্গে সমুদ্রে টক্কর দিতে গেলে বেকায়দায় পড়বে চিন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গতকাল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী বালিতে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে হাতে হাত মেলান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিশ্লেষকদের মতে, গালওয়ান পরবর্তী পরিস্থিতিতেও শান্তির বার্তা দিচ্ছে ভারত। কিন্তু আগ্রাসনের কড়া জবাব দিতে ফৌজ পেছপা হবে না, এটা মালাবার মহড়ার মাধ্যমে বেজিংকে হুঁশিয়ারি দিল্লির।
[আরও পড়ুন: বরফ গলার ইঙ্গিত! গালওয়ান সংঘর্ষের পর প্রথমবার করমর্দন মোদি-জিনপিংয়ের]
গত বুধবার (৯ নভেম্বর) জাপানের (Japan) ইয়োকোসুকা নৌসেনা ঘাঁটি থেকে শুরু হয় ‘মালাবার ২০২২’ নৌমহড়া। এতে অংশ নিচ্ছে ভারতীয় নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ ‘আইএনএস শিবালিক’ ও ‘আইএনএস কামোর্তা’। ভারতীয় নৌবহরের নেতৃত্বে রয়েছেন নেভির ইস্টার্ন ফ্লিটের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল সঞ্জয় ভাল্লা। এই মহড়ায় মার্কিন নৌসেনার সেভেনথ ফ্লিটের দায়িত্ব রয়েছে ভাইস অ্যাডমিরাল কার্ল থমাসের হাতে। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে থাকছেন রিয়ার অ্যাডমিরাল জনাথন আরলি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন জাপানি নৌসেনার প্রধান ইউআসা হিদেকি।
উল্লেখ্য, ১৯৯২ থেকে সমুদ্র সুরক্ষার লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে আমেরিকার সঙ্গে যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছিল ভারত। ২০১৫ সালে মালাবার মহড়ায় যুক্ত হয়েছিল জাপানের নৌবাহিনীও। গোড়া থেকেই তা নিয়ে বেজিং সন্দিহান ছিল। তাদের ধারণা, ভারতীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের ক্ষমতা জাহির করতেই এই মহড়া করা হয়।