বাবুল হক, মালদহ: মাত্র ১৯ বছর বয়সি আসিফ তার বাবা, মা, বোন এবং দিদাকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে। তবে অপরাধপ্রবণ মানসিকতা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তদন্তকারীরা। সে সমস্ত বিষয় সম্পর্কে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টায় ধৃত আসিফকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করার ভাবনাচিন্তা করেছিল পুলিশ। সেই অনুযায়ী রবিবার আসিফ ও তার দুই বন্ধুকে মালদহ জেলা আদালতে তোলা হয়। আসিফকে ১২ দিন এবং দুই বন্ধুকে ৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিলেন বিচারক। আসিফের বিরুদ্ধে খুন, অস্ত্র আইনে এবং আসিফের দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে শুধুমাত্র অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়েছে।
শনিবার সকালে সামনে আসে বাবা, মা, বোন এবং দিদাকে খুনের ঘটনা। দুপুরের দিকে উদ্ধার হয় তাঁদের প্রত্যেকের দেহ। তার আগেই অবশ্য খুনের কথা স্বীকার করে নিয়েছিল অভিযুক্ত আসিফ। জানিয়েছিল গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এমন হাড়হিম করা কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। জেরায় স্বীকার করে নেয় ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পরিজনদের অচৈতন্য করে। তারপর একে একে সকলকে ফেলে দেওয়া হয় গুদামঘরের চৌবাচ্চায়। চাপা দিয়ে দেওয়া হয় বালি, সিমেন্ট। এই খুনের মোটিভ নিয়ে চিন্তার মাঝেই মালদহ হত্যাকাণ্ড নয়া মোড় নেয়। আসিফের বয়ান অনুযায়ী দুই বন্ধুর বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। কুড়ি বছর বয়সি সাবির আলম এবং বছর বাইশের মাফুজ আলিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে পাঁচটি সেভেন এমএম পিস্তল, ৮৪টি গুলি এবং ১০টি ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়।
তবে কি ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে অস্ত্র কেনাবেচা করত আসিফ, সেই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিতে থাকে। যদিও এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মালদহ হত্যাকাণ্ডের সপ্তাহখানেক আগে আসিফ তার ওই দুই বন্ধুর বাড়িতে যায়। তাদের কাছে অস্ত্রশস্ত্রগুলি রেখে আসে সে। অস্ত্রগুলি কীভাবে জোগাড় করল আসিফ, তা জানা যায়নি। অস্ত্র মজুতের সঙ্গে খুনের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা। সম্পত্তিগত বিবাদের জেরেই বাবা, মা, বোন এবং দিদাকে আসিফ খুন করেছে বলেই অনুমান পুলিশের। এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা নিজেদের হেফাজতে নিয়ে আসিফকে জিজ্ঞাসাবাদের পরই তা স্পষ্ট হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।