বাবুল হক, মালদহ: বাবা, মা, বোন এবং দিদাকে খুনে মূল অভিযুক্ত আসিফ এখনও পুলিশ হেফাজতে। খুনের মোটিভ নিয়ে এখনও ধন্দে তদন্তকারীরা। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, মৃত্যুর সময় মানুষের অভিব্যক্তি কেমন হয় সেই ছবি-ভিডিও চড়া দামে নানা ওয়েবসাইটে বিক্রির চক্রান্ত করেছিল আসিফ। সে কারণেই পরিজনদের খুন করেছিল সে। যদিও পুলিশের হাতে এখনও পর্যন্ত কোনও ছবি উদ্ধার করা যায়নি।
চলতি মাসেই সামনে আসে হাড়হিম করা মালদহ হত্যাকাণ্ড (Maldah Murder Case)। কালিয়াচকের আট মাইলে বাসিন্দা বছর উনিশের আসিফ দাবি করে, ঠান্ডা পানীয়ের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বাবা, মা, বোন এবং দিদাকে প্রথমে অচৈতন্য করে সে। মুখে লাগানো হয় সেলোটেপ। বেঁধে দেওয়া হয় হাত। পরে তাঁদের একে একে ৭০ ফুট উঁচু ‘রহস্যময়’ গুদামঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে থাকা চৌবাচ্চার মধ্যে ঢুকিয়ে জলে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। মৃত্যু হয় প্রত্যেকের। তবে দাদা কোনওক্রমে প্রাণে বেঁচে যান। তাই এমন অপরাধের পর্দাফাঁস হয়। ঠিক কী কারণে ঠান্ডা মাথায় পরিজনদের খুন করল আসিফ, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে আসিফ প্রত্যেককে খুন করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে। যদিও গুদামঘরে থাকা প্রচুর সিসিটিভি তদন্তকারীদের মনে নয়া সন্দেহের জন্ম দিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, মৃত্যুর সময় ঠিক কেমন অভিব্যক্তি হয় মানুষের সেই ছবি ও ভিডিও চড়া দামে বিক্রির ছক কষেছিল আসিফ। সে কারণে এমন পরিকল্পনা করে নিজের কাছের মানুষদের হত্যার ছক কষেছিল সে। যদিও এখনও পর্যন্ত সেরকম কোনও ছবি পুলিশের হাতে আসেনি।
[আরও পড়ুন: দোলনায় খেলার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুর রহস্যমৃত্যু বর্ধমানে, অভিযুক্ত বাবা]
তবে ঘটনার পর থেকে দফায় দফায় আসিফের বাড়িতে হানা দেন তদন্তকারীরা। তার ঘর থেকে প্রচুর পরিমাণ বৈদ্যুতিন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়েছে। ল্যাপটপও পাওয়া গিয়েছে। স্কুলের গণ্ডি পেরতে না পারলেও আসিফ যে বেশ টেকস্যাভি ছিল সে বিষয়টিও পুলিশের কাছে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট। তার ল্যাপটপটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখার পরই এ সম্পর্কে জানা সম্ভব হবে বলেই আশা তদন্তকারীদের।