shono
Advertisement

এই বাড়ির পুজোয় ৮ মণ দুধে তুষ্ট করা হয় দেবী দুর্গাকে

নবমীর সন্ধ্যায় বসাক বাড়ির মহিলারা দেবীর আরতি করেন। The post এই বাড়ির পুজোয় ৮ মণ দুধে তুষ্ট করা হয় দেবী দুর্গাকে appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 07:01 PM Oct 12, 2018Updated: 07:01 PM Oct 12, 2018

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির sangbadpratidin.in৷ আজ রইল  মালদেহর বসাক বাড়ির দুর্গাপুজোর কথা।

Advertisement

বাবুল হক, মালদহ:  আজও ঐতিহ্যে অটুট মালদহের বসাক বাড়ির দুর্গাপুজো। আট মণ দুধ দিয়ে থান ধোয়ানোর রেওয়াজ রয়েছে। তেমনি সোনার গয়নায় দেবী দুর্গাকে সাজানো হয়ে থাকে। প্রথা মেনেই চলে মাতৃ আরাধনা। আসলে ওপার বাংলার পুজো এটি। যদিও দেশভাগের পর ফি বছর এপার বাংলায় পুজো হয়ে আসছে। মালদহের বসাক বাড়ির পুজোর সূচনা হয়েছিল বাংলাদেশে। ৮৪ বছর আগে বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার বুড়াকালীতলায় দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন বসাক পরিবারের সদস্যা গৌরীবালা দেবী। টানা ৩১ বছর ওপার বাংলায় পুজো হয়। সেই পুজোই ৫৩ বছর ধরে হয়ে আসছে মালদহ শহরের বাঁশবাড়িতে। বসাকবাড়ির সাত ভাই ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এই পুজো করে চলেছেন। এই বসাকবাড়ির পুজোর নামডাক রয়েছে জেলাজুড়েই। বাঁশবাড়িতে বসাক পরিবারের এই পুজো দেখতে আসেন শহরের বাইরের দর্শনার্থীরাও। ঐতিহ্য অটুট রয়েছে আজও।

বসাক পরিবারের সদস্যরা জানালেন, গৌরীবালা দেবীই এই পুজোর সূচনা করেছিলেন। তিনি একদিন স্বপ্নাদেশ পেয়ে গৃহকর্তাকে বলেছিলেন, মা তার কাছে পুজো চাইছেন। তারপরই মায়ের পুজো করার যাবতীয় আয়োজন করেন বসাক পরিবারের গৃহকর্তা। সেই থেকেই পুজো শুরু হয়। ওপারে পুজো শুরুর দীর্ঘ ৩১ বছর পর বসাক পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ থেকে মালদহে চলে আসেন। তবু পুজো বন্ধ হয়নি। ওপার বাংলার পুজো শুরু হয় এপার বাংলায়। ঐতিহ্য বজায় রেখে প্রথা মেনে প্রত্যেক বছর পুজো হয়ে আসছে ইংলিশবাজারের বাঁশবাড়িতে। রীতি মেনে দেবীর প্রতিটি হাতে আসল জোড়া শাঁখা পরানো হয়। এই শাঁখার এক জোড়ার খরচ বহন করেন পরিবারের সাত ভাই। বাকিগুলির খরচ দেন নাতি-নাতনিরা। বসাকবাড়ির দুর্গা প্রতিমা বেনারসি শাড়ি পরেন। লক্ষী, সরস্বতীকেও বেনারসি শাড়ি পরানো হয়। কার্তিক, গণেশকে পরানো হয় বেনারসির ধুতি। মৃৎশিল্পীর সাহায্য নিয়ে বসাক পরিবারের মহিলা সদস্যরাই প্রতিমাকে শাড়ি ও ধুতি পরান। সেই ধারাবাহিকতা আজও বজায় রয়েছে। ডাকের সাজ নয়, সোনার গয়নায় দেবীকে সাজানো হয়।

[এবার পুজোয় আপনিও দুর্গা কিংবা অসুর, জানেন কীভাবে?]

মা দুর্গাকে দুধে তুষ্ট করা হয়। প্রতিমাকে থানে বসানোর আগে আট মণ দুধ দিয়ে থান ধোয়ানোর রেওয়াজ এখনও অব্যাহত। চতুর্থী থেকেই থান ধোয়ার কাজ শুরু হয়। অনেকেই মানত করে থাকেন। তাঁরাও থানে দুধ ঢালেন। যদিও রীতি মেনে চলতে গিয়ে পরিবারের বাইরের কাউকে থান স্পর্শ করতে দেওয়া হয় না। পঞ্চমীর দিন থানে শীতলপাটি পাতা হয়। ষষ্ঠীতে পরিবারের সদস্যরা সেই শীতলপাটির উপরে একচালার দুর্গা প্রতিমাকে প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর শুরু হয় দেবীর আরাধনা। নবমীর দিন মা চণ্ডীকে ঘরে তোলা হয়। যাকে বলে ‘ভরা তোলা’। ওই দিন সন্ধ্যায় বাড়ির মহিলারা মায়ের আরতি করেন। শুধু মাত্র দশমীর দিনই এখানে অঞ্জলি দেওয়া হয়। অঞ্জলির সঙ্গে দোকানের খাতা, বইপত্র ও সিঁদুরের কৌটো রেখে পুজো দেওয়া হয়। পঞ্চমীর দিন থেকে দ্বাদশী পর্যন্ত বসাক পরিবারের সদস্যরা এক সঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া করেন। তাঁরা পাঁচ দিন নিরামিষ খান। দশমীতে সবাই মাছ খান। সপ্তমীর দিন থেকে শুরু হয় ভোগ। শালুক ফুলের বীজ দিয়ে তৈরি ঢাপের খই এই পুজোর অন্যতম উপকরণ। দেশি ঘি দিয়ে ভোগ রান্না করা হয় বসাকবাড়ির পুজোয়। ভোগে তেল একেবারেই নিষিদ্ধ। এই নির্দেশ ছিল গৌরীবালা দেবীর। নির্দেশ মেনেই নবমীতে পাঁচ তরকারি, চাটনি ও পায়েস ভোগের রেওয়াজ আছে। মহানন্দা নদীতে নৌকা বাইচ খেলার পর দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়।

[জানেন, কেন এই বনেদি বাড়ির পুজোয় দুর্গার বাঁদিকে থাকে গণেশ?]

The post এই বাড়ির পুজোয় ৮ মণ দুধে তুষ্ট করা হয় দেবী দুর্গাকে appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement