বাবুল হক, মালদহ: প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস আগে বাড়ির উঠোনেই বসেছিল ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। হাজির ছিলেন স্বয়ং জেলাশাসক। তারপরেও সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ ওঠে। মালদহের রতুয়ার সম্বলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ইসলামপুরের দৃষ্টিহীন সেই পরিবারের অভিযোগ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ প্রকাশিত হয়। তার জেরেই মাত্র সাতদিনের মধ্যেই জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়ার নির্দেশে সরকারি সুবিধা পেল সেই পরিবার। এক সপ্তাহের মধ্যেই বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হল।
সোমবার সরকারি কর্মীরা সেই বাড়িতে গিয়ে নতুন শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে কি না, সেটা সরেজমিনে দেখে আসেন। উল্লেখ্য, মালদহের রতুয়া-২ নম্বর ব্লকের সম্বলপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ইসলামপুর গ্রামে রয়েছে হতভাগ্য এক পরিবার। সেই পরিবারের পাঁচ সদস্যই অন্ধ। ভিক্ষাবৃত্তি করে তাঁরা বেঁচে রয়েছেন। বাড়ির কর্তা বাবলু শেখ জন্মান্ধ৷ তাঁর দুই বোন এবং এক ছেলে ও এক মেয়েও জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন। আলো দেখার সুযোগ হয়নি তাঁদের। বাবলুর স্ত্রী শেফালি বিবিই একমাত্র দেখতে পান৷ তিনিই সবাইকে আগলে রেখেছেন।
[আরও পড়ুন: বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, গো ব্যাক স্লোগান, রতুয়ায় ব্যাপক উত্তেজনা]
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে সেই ইসলামপুর গ্রামে চলছিল ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। দৃষ্টিহীন বলে তাঁরা কেউ শিবিরে পৌঁছতে পারেননি। বিষয়টি জানতে পেরে জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া গোটা ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির নিয়ে পৌঁছে গিয়েছিলেন সেই দৃষ্টিহীন মানুষগুলির উঠোনে। ওই পরিবারের যাবতীয় সমস্যা শুনে সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দিয়েছিলেন জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া।
কিন্তু সাড়ে পাঁচ মাস পরেও কোনও কাজ না হওয়ায় অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খবর প্রকাশিত হয় ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ। তা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জেলাশাসক। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয় ব্লক প্রশাসনকে। এবার সাতদিনেই মিলল সুবিধা। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন পাকা শৌচাগার নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়েছে। পাঁচজনের মানবিক ভাতা চালু হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। বাকি সমস্যাগুলিও মেটানোর প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হয়ে যাবে। তাতে খুশি শেখ বাবলু ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা জেলাশাসকের মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা করবেন বলে জানিয়েছেন।