সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদেশি ঋণের বোঝায় জেরবার হতে পারে মালদ্বীপ! সেই আশঙ্কাই প্রবল হচ্ছে। যা নিয়ে এবার দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সতর্ক করল আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার। সমস্যা সমাধানে দ্রুত সেদেশের নীতি বদলের পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, নাম না করলেও বাইরের দেশ থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের ইঙ্গিত চিনের দিকেই। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু ‘চিনপ্রীতি’র কথা সবার জানা। তাঁর মসনদে বসার সুযোগে মালদ্বীপকে ঋণ দেওয়ার পরিমাণ বাড়িয়েছে বেজিং।
মালদ্বীপের আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট পেশ করেছে আইএমএফ। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঋণ নেওয়ার নিরিখে বড় ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে মালদ্বীপ। যদিও এক্ষেত্রে কোনও দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি। প্রকাশ্যে আনা হয়নি মালদ্বীপের মোট ঋণের পরিমাণও। তবে বিবৃতিতে দিয়ে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে সতর্ক করে বলা হয়েছে, “সমস্যা সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে নীতি সংশোধনের প্রয়োজন। নীতি বদল না করলে মালদ্বীপে রাজকোষে ঘাটতি এবং ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে।”
[আরও পড়ুন: ‘আমেরিকাকে দুর্বল ভাবে’, দিল্লির ‘রাশিয়াপ্রীতি’কে তোপ ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিকি হ্যালির]
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বরে মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট হন ‘চিনপন্থী’ মুইজ্জু। এই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে মালদ্বীপের তহবিলে সাহায্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে বেজিং। সম্প্রতি চিন সফরে গিয়ে এই সহযোগিতার কথা নিজেই জানিয়েছিলেন মুইজ্জু। তাঁর বক্তব্য ছিল, ১৯৭২ সালে মালের সঙ্গে বেজিংয়ের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তৈরি হওয়ার পর থেকেই নাকি সেদেশের উন্নয়নের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে চিন। দেশের উন্নয়নমূলক তহবিলে ‘নিঃস্বার্থ সহযোগিতা’র জন্য প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের দেশকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তিনি।
বিশ্লেষকদের মতে, মালদ্বীপকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফ কোনও দেশের নাম উল্লেখ না করলেও তাদের ইঙ্গিত যে চিনের দিকে তা স্পষ্ট। এমনটিতেই ‘চিনপ্রীতি’ কারণে নিজের দেশে বিরোধীদের প্রবল প্রতিবাদের মুখে পড়েছেন মুইজ্জু। এবার তাঁর এই ‘বন্ধুত্বে’র জন্য বড় বিপদের সম্মুখীন হতে চলেছে সেদেশের অর্থনীতি। ফলে আরও বিপাকে পড়তে চলেছেন মুইজ্জু।
[আরও পড়ুন: ‘একমাত্র জয়ই ইজরায়েলকে সুরক্ষিত করবে’, হামাসের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ফের নাকচ নেতানিয়াহুর]
বলে রাখা ভালো, মালদ্বীপের অর্থনীতি মোটের উপর নির্ভর করে পর্যটন শিল্পের উপর। কিন্তু করোনা অতিমারির সময় পর্যটক প্রায় না আসায় মার খেয়েছে সেদেশের অর্থনীতিও। তাই বিদেশি ঋণের উপর নির্ভর করছে মালদ্বীপ সরকার। অন্যদিকে, গত একমাসে ভারতের সঙ্গেও সংঘাত তীব্র হয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রটির। অন্তর্বর্তী বাজেটে মালদ্বীপের জন্য বরাদ্দ অনুদানে বড়সড় কাটছাঁট করে দিয়েছে কেন্দ্র। এই আবহে মুইজ্জুর দেশকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসে ‘দেউলিয়া’ পাকিস্তান।