সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তালিবান (Taliban) প্রশাসন আফগানিস্তানে মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর নিন্দায় সোচ্চার হয়েছে গোটা বিশ্ব। আফগান ছাত্রীরা প্রকাশ্যে রাজপথে প্রতিবাদ জানিয়ে পুলিশের মারও খেয়েছেন। এবার প্রতিবাদে যোগ দিলেন আফগান ছাত্ররাও। সাফ জানিয়ে দিলেন, যেখানে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই, সেই শিক্ষা চান না তাঁরাও। মেয়েরা ক্লাস করতে না পারলে তাঁরাও যোগ দেবেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসে। এভাবেই তাঁরা সহপাঠী বান্ধবীদের পাশে দাঁড়াতে চাইলেন।
রাজপথে প্রতিবাদে মোজাম্মেল নামে এক ছাত্রকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘যতক্ষণ না মেয়েদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা খুলছে, আমরাও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ বন্ধ রাখব। আমাদের এই ক্লাস বয়কট চলবে। দরকারে আর এমন শিক্ষা নেবই না।’’ আরেক ছাত্র নবিদুল্লা নামের বলেছেন, ‘‘আমাদের বোনেদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরাও আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাই না।’’
[আরও পড়ুন: চিনের করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি! উদ্বেগ বাড়িয়ে মুখ খুললেন জিনপিং]
গত বছরের আগস্টে নতুন করে আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করার পর তালিবান আশ্বাস দিয়েছিল, এটা তালিবান ২.০। যারা নারী স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতার মতো বিষয়গুলিতে বিশ্বাস করে। কিন্তু সেই কথা যে স্রেফ কথার কথা ছিল, তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল কয়েক দিনের মধ্যেই। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সময়কালেও মেয়েদের উচ্চশিক্ষার অধিকার ছিল না। এছাড়াও পরকীয়া, চুরির মতো ঘটনায় প্রকাশ্যে বেত মারা এমনকী মেরে ফেলার ঘটনাও ছিল স্বাভাবিক। সেই বিষয়গুলিই নতুন করে কার্যকর হচ্ছে।
গত কয়েক মাসে একের পর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছে মহিলাদের উপরে। মিডল স্কুল ও হাই স্কুলে পড়াশোনায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। মেয়েদের কাজ করার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়। এছাড়াও রাস্তায় একা চলাফেরা, বুরখা পরা নিয়েও কঠোর নিয়ম জারি করা হয়েছে। সঙ্গে একজন পুরুষ না থাকলে পার্ক ও জিমে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না মেয়েদের।
তালিবানের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী নেদা মহম্মদ নাদিম আফগানিস্তানের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মহিলাদের উচ্চশিক্ষার উপরে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি হচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা অবধি মহিলাদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দেওয়া যাবে না। এবার সেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে গর্জে উঠছে পড়ুয়ারা।