বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সিবিআইয়ের (CBI) কাজ অপরাধের তদন্ত করা। রেল দুর্ঘটনার তদন্ত করার মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো তো সংস্থার নেই। তাহলে কি দুর্ঘটনার আসল কারণ আড়াল করতেই রেলমন্ত্রী সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন? এই প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) চিঠি দিলেন মল্লিকার্জুন খাড়গে (Mallikarjun Kharge)। করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পরে দশটি প্রশ্ন করেছেন রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা। তার মধ্যে রয়েছে রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা, রেলের একাধিক শূন্যপদে নিয়োগে গড়িমসির প্রশ্নও। রেলের তরফে দুর্ঘটনা নিয়ে আগাম সতর্কতা দেওয়া সত্ত্বেও কেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া গেল না, তা নিয়েও সমালোচনায় সরব খাড়গে।
করমণ্ডল দুর্ঘটনার (Coromandel Express Accident) পরে সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw)। যদিও তিনি দাবি করেছিলেন, ঘটনার সমস্ত তথ্য নিয়ে রিপোর্ট রয়েছে রেলের কাছে। তা সত্ত্বেও কেন সিবিআই, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলগুলির অনেকেই। ঘটনার তদন্ত যেন কেন্দ্রের অনুকূলে হয়, তাই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ বলেই ধারণা বিরোধীদের। এহেন পরিস্থিতিতে চিঠি লিখে খাড়গে বলেছেন, “অপরাধের তদন্ত করা সিবিআইয়ের কাজ, রেল দুর্ঘটনার নয়। সিবিআই বা অন্য কোনও তদন্তকারী সংস্থার পক্ষে প্রযুক্তিগত বা রাজনৈতিক ব্যর্থতার তদন্ত করা সম্ভব নয়।” তবে ২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী রেল দুর্ঘটনার তদন্তভার ছিল সিবিআইয়ের হাতে।
চিঠিতে খাড়গে লিখেছেন, রেলের প্রতি সৎ মায়ের মতো আচরণ করছে কেন্দ্র। রেলের জন্য আলাদা বাজেট বাতিল করে দেওয়ার জেরেই কি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিষেবা? প্রশ্ন কংগ্রেস সভাপতির। তিনি আরও বলেছেন, “প্রায় ৩ লক্ষ পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে রেলে। সেখানে নিয়োগ হচ্ছে না কেন? রেলের রিপোর্টে দুর্ঘটনার সতর্কতা দেওয়া সত্ত্বেও কেন তা উপেক্ষা করা হল?” প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই সভাপতি রেল নিয়ে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের রিপোর্ট পেশ করা হয়েছিল। দুর্ঘটনার কবলে পড়তে পারে রেল, এমনই দাবি করা হয়েছিল ওই রিপোর্টে।
১০টি প্রশ্নের এই চিঠিতে খাড়গের দাবি, করমণ্ডল দুর্ঘটনার (Coromandel Express) পরে সরকারের চোখ খোলা উচিত। রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে, যাত্রীদের বিশ্বাস চলে গিয়েছে রেলের উপর থেকে। অবিলম্বে রেলের সমস্ত রুটে বাধ্যতামূলকভাবে সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে, দাবি খাড়গের।