সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: পেগাসাস মামলায় সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট পেশ করল বিশেষজ্ঞ কমিটি। ফোনে আড়িপাতা সংক্রান্ত মামলার তদন্তে সহযোগিতা করেনি মোদি সরকার। শীর্ষ আদালতে পেশ করা রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই বিশেষজ্ঞ কমিটি যে ২৯টি ফোন পরীক্ষার জন্য নিয়েছিল, তার মধ্যে ৫-টিতে মিলেছে সন্দেহজনক ম্যালওয়ারের অস্তিত্ব। তবে একই সঙ্গে কেন্দ্রের জন্য স্বস্তির খবর হল, এই ২৯টি ফোনের কোনওটিতেই পেগাসাসের অস্তিত্বের নিশ্চিত প্রমাণ মেলেনি।
গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রধান বিচারপতি এনভি রামনার (NV Ramana) বেঞ্চ পেগাসাস (Pegasus) কাণ্ডে প্রাক্তন বিচারপতি আরভি রবীন্দ্রনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ‘সিট’ গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই সঙ্গে গঠন করা হয়েছিল আলাদা একটি প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ কমিটি। পেগাসাস-কাণ্ডের তদন্তে নিযুক্ত প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ কমিটি জানিয়েছে, পেগাসাস ‘স্পাইওয়্যার’ (Spyware) সংক্রমিত ২৯টি ফোন করেও কোনও ফোনেই পেগাসাসের অস্তিত্বের নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
[আরও পড়ুন: নাবালিকাকে ‘ধর্ষণ’, এক বছর পর বিয়ে, অভিযুক্তকে মুক্তি দিল কর্ণাটক হাই কোর্ট]
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতে পেগাসাস মামলার শুনানি ছিল। শুনানি চলাকালীন বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট পড়ে শোনায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কেন্দ্র তদন্তে সহযোগিতা করেনি। পেগাসাস ব্যবহার করে কারও ফোনে আড়িপাতা হয়েছে কিনা, সেটা প্রকাশ্যে না আনার অবস্থানে অনড় থেকে গিয়েছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, প্রজুক্তিগত বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং আরভি রবীন্দ্রনের নেতৃত্বাধীন সিট মোট তিনটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। শীর্ষ আদালত এই তিনটি রিপোর্টের মধ্যে একটি প্রকাশ্যে এনেছে। মামলাকারীরা আরও দুটি রিপোর্ট দেখতে চেয়েছেন। শীর্ষ আদালত তাঁদের দাবি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ইসলাম আইন অনুযায়ী বিয়ে করতে পারে বয়ঃসন্ধি পার করা নাবালিকারা, রায় দিল্লি হাইকোর্টের]
প্রসঙ্গত, গত বছর এপ্রিল মাসে পেগাসাস (Pegasus) রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই উত্তাল হয়ে ওঠে জাতীয় রাজনীতি। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করে, পেগাসাস নামের এই ইজরায়েলি সফটওয়্যার ব্যবহার করে দেশের প্রথম সারির রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, শিল্পপতি এমনকী সরকারি আমলাদের উপরও নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্র। ওই সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, কেন্দ্রের টার্গেটে ছিলেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi), অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোর, রাকেশ আস্তানা, প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার অশোক লাভাসার মতো ব্যক্তিত্বরা। এমনকী কেন্দ্রের দুই মন্ত্রীও নাকি টার্গেট ছিলেন সরকারের।