সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এবার স্কাইওয়াক নিয়ে রাজ্য-মেট্রো সংঘাত চরমে। কবি সুভাষ- দক্ষিণেশ্বর রুটে মেট্রো চলাচল মসৃণ করতে রাজ্যের কাছে জমি চেয়েছে আরএনভিএল। তাতেই দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াকের কিছুটা ভাঙা পড়তে পারে। এর বিরুদ্ধেই মঙ্গলবার গর্জে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ জানিয়ে দিলেন, “দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক ভাঙতে দেব না।”
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, “দক্ষিণেশ্বরের স্কাইওয়াক হৃদয়ের মণিমুক্তো। শেষ রক্তবিন্দু থাকতে ভাঙতে দেব না। প্রয়োজনে আমি বিকল্প রুট করে দেব। বুদ্ধি খরচ করুন।” তিনি আরও বলেন, “আলিপুর বডিগার্ড লাইন পুলিশের হৃদয়ের মণিমুক্তো। রাজ্যের ঐতিহ্য। এর কোনওটাই ভাঙতে দেব না।” প্রয়োজনে মেট্রোর রুট বদলাতে হবে মত মমতার।
[আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় পথকুকুরকে বাঁচাতে গিয়ে দুর্ঘটনা, মৃত্যু জলপাইগুড়ির পুলিশ আধিকারিকের]
জটিলতার সূত্রপাত মেট্রোর স্টেশন সংস্কারের ভাবনা থেকে। কবি সুভাষ থেকে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রোর সংখ্যা বাড়াতে এবং চলাচল মসৃণ করতে ওই স্টেশন সংস্কারের কথা ভেবেছে কর্তৃপক্ষ। তার জন্য লাইনের দৈর্ঘ্য বাড়াতে চেয়ে রাজ্যের কাছে জমি চেয়েছে রেল। কিন্তু সেই জমি দিতে গেলে দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াকের একাংশ সরাতে হবে। ভাঙতে হবে বেশ কিছুটা। আর তাতে যে রাজ্যের সম্মতি নেই তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এদিন তা নিয়ে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর দৃঢ় কণ্ঠে ঘোষণা, তোমরা আমাদের বুকের উপর বসে আমাদের দীর্ঘদিনের হেরিটেজ ভেঙে দেওয়া চেষ্টা করবে, সেটা আমি হতে দেব না।”
রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান বলেন, “আমি দীর্ঘদিন রেলমন্ত্রক সামলেছি। কোনও সমস্যা হলে কীভাবে সমাধান করতে হয়, তা আমি জানি। বাংলায় মেট্রো জোন আমরা তৈরি করেছিলাম। দিল্লি মেট্রেরা সমস্যা আমি দূর করেছিলাম। আমি না থাকলে দিল্লি মেট্রো হতোই না।” এক্ষেত্রে নিজেই মেট্রোর বিকল্প রুট তৈরি করে দিতে পারেন বলে জানিয়ে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “দক্ষিণেশ্বর আজকের নয়। সেখানে হাত দিতে গেলে স্বামী বিবেকানন্দর কথা মনে করতে হবে। রামকৃষ্ণ দেবের কথা মনে করতে হবে। মা ভবতারিণীর কথা মনে করতে হবে। দক্ষিণেশ্বর বেলুড়ের লক্ষ লক্ষ ভক্ত রয়েছে। তাঁদের কথা মনে রাখতে হবে।” সবমিলিয়ে দক্ষিণেশ্বর স্কাইওয়াক ভাঙা নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্রের সংঘাত নতুন মাত্রা নিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।