ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: শুভেন্দু অধিকারী তো বটেই, তাঁর অনুগামীদেরও আর দলে রাখতে নারাজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার দলীয় বৈঠক থেকে তিনি তাৎপর্যপূর্ণভাবে দলবিরোধী কাজের করছে, এমন নেতাদের চিহ্নিত করে বের করে দেওয়ার কাজটা দিলেন শিশির অধিকারীকেই (Sishir Adhikary)। শুভেন্দু-পিতা তথা কাঁথির সাংসদকে নির্দেশ দেন, ”নন্দীগ্রাম ও কাঁথি ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি বদল করে দিন। যারা দলবিরোধী কাজ করছে, এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে দল থেকে বের করে দিন। দলবিরোধী কাজ করছে এমন কাউকে ধরে রাখা যাবে না। যাঁরা সাহস করে থাকতে চান, থাকুন। যাদের সাহস হবে না, লুটেরাদের দলে চলে যান। ১ জন চলে গেলে ১ লক্ষ সম্পদ তৈরি হবে।” এরপর আর বুঝতে বাকি নেই যে ঠিক কোনদিকে ইঙ্গিত দলনেত্রীর।
এদিনের বৈঠকে তিনি সকলকে আরও একবার মনে করিয়ে দেন, দলে নতুন পুরনো সবারই গুরুত্ব আছে। সবাই হাতে হাত মিলিয়ে ভোটের লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যারা গোপনে অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার ভয় পাচ্ছেন, তাদের দল থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশই দিলেন নেত্রী। তাঁর কথায়, ”ভোট এলেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে ভয় দেখানো হয় দলের কর্মীদের। কিন্তু ভয় পেলে চলবে না।”
[আরও পড়ুন: রাজভবনে শোভন-বৈশাখী, কলেজের সমস্যায় ফিরহাদের ‘সাম্প্রদায়িক’ মন্তব্য নিয়ে নালিশ]
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের নতুন কর্মসূচি স্থির করে দেন –
- ৮,৯,১০ ডিসেম্বর – গান্ধী মূর্তি পাদদেশে তিনদিনের জন্য অবস্থান-বিক্ষোভ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষেতমজুর সমিতির।
- তিনদিনের এই সমাবেশ আয়োজনের নির্দেশ দিলেন হরিপালের বিধায়ক তথা সংগঠনের সভাপতি বেচারাম মান্নাকে।
- ১০ তারিখ, সোমবার সমাবেশের শেষদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষণ দেবেন ধর্মতলার মঞ্চে।
বৈঠকে আচমকা এক অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্যের মাঝেই হঠাৎ বলে ওঠেন, কেউ কেউ আসন দখলের জন্য তাঁর মৃত্যু কামনা করছেন। উত্তেজনায় গলা কাঁপতে থাকে তাঁর। দলের অন্যান্যরা তাঁকে সামলান। দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, লড়াকু মমতা অবশ্য নিজেও নিজেকে সামলে নিয়েছেন।