ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: “মমতা শুরু থেকেই ফাইটার। কান্দাহার বিমান অপহরণের সময় নিজে পণবন্দি হিসেবে যেতে চেয়েছিলেন। জঙ্গিদের হাত থেকে বন্দিদের ছাড়ানোর জন্য নিজে আত্মত্যাগ করতে রাজি ছিলেন মমতা। আমি নিশ্চিত বাংলার নির্বাচনে তৃণমূল বড় সাফল্য পাবে। বাংলার এই ভোট বাংলার পাশাপাশি গোটা দেশের ভবিষ্যতের জন্যও ভীষণ জরুরি। বাংলা থেকেই ২০২৪-এ পরিবর্তন হবে দিল্লিতে।” শনিবার তৃণমূল ভবনে বসে কথাগুলি বললেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। এদিন খানিকটা চমকপ্রদভাবেই রাজ্যের শাসকদলে যোগ দিলেন তিনি।
সূত্রের খবর, আজ সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে যশবন্তর। মমতার সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট কথা বলার পরই শাসক শিবিরে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তৃণমূল ভবনে তাঁর হাতে দলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের তিন শীর্ষনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন, সুব্রত মুখোপাধ্যায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুব্রত বলেন, “যশবন্ত সিনহার মতো মানুষ এসে আমাদের ধন্য করলেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের পথ প্রদর্শক হিসেবে থাকবেন। সারা ভারতবর্ষে তিনি তৃণমূলের আদর্শ প্রচার করবেন। তাঁর নেতৃত্বে গোটা দেশে তৃণমূলের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চক্রান্তের শিকার না হলে, আজ তিনি নিজেই উপস্থিত থাকতেন। আমরা মমতা এবং যশবন্তের যৌথ পথপ্রদর্শনে এগিয়ে যাব।”
[আরও পড়ুন: আজই চূড়ান্ত হবে বিজেপির ২৩৪ আসনের প্রার্থী! নিজেদের তালিকা নিয়ে দিল্লিতে রাজ্য নেতারা]
কিন্তু জীবনের শেষ বয়সে এসে কেন হঠাত তৃণমূলে যোগ? ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন তিনি। বললেন, “আজকের ঘটনায় হয়তো আপনারা চমকে গিয়েছেন। কেন এই বয়সে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরলাম? আসলে দেশ এই মুহূর্তে এক অদ্ভুদ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সমস্ত স্বশাসিত সংস্থা আজ বিপদের মুখে। এর মধ্যে রয়েছে বিচারব্যবস্থাও। দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন। অথচ, কারও কোনও হেলদোল নেই। আজ এই দেশে কৃষক, মজুর সকলেই ত্রস্ত। স্বাস্থ্য, শিক্ষাক্ষেত্রে চরম দুর্দিন চলছে। তাতেও উদাসীন সরকার। এখনকার কেন্দ্রীয় সরকারের একটাই লক্ষ্য, ভোটে জেতা।”
[আরও পড়ুন: ভোটপ্রচারে চমক বামেদের, রাজ্যে আসতে পারেন কাফিল খান-কানহাইয়া কুমাররা]
মমতার সুরেই যশবন্ত বললেন, “অটলজির বিজেপি আর আজকের বিজেপির মধ্যে বিস্তর ফারাক। অটলজি সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করতেন। এখনকার সরকার সবাইকে দমন করার নীতিতে বিশ্বাস রাখে। অটলজির আমলে আমরা দেশজুড়ে মহাজোট গঠন করেছিলাম। অথচ, আজকের বিজেপির পাশে কেউ নেই। তার কারণ এই বিজেপি সঙ্গে থাকার যোগ্য নয়। এই লড়াই শুধু ভোটের বা রাজনীতির লড়াই নয়। এটা দেশের গণতন্ত্রের লড়াই, দেশের অস্মিতা বাঁচানোর লড়াই।”