ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রেড রোডে (Red Road) মুখ্যমন্ত্রীর ধরনা মঞ্চ থেকে যে বহুমুখী কিছু হবে, তা জানাই ছিল। হলও তাই। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, দলে নতুন যোগদান, নতুন কর্মসূচি – অনেক কিছুই হল দু’দিনের ধরনামঞ্চে। তবে এবার রাজনৈতিক দলের ভিতরে সংগীতচর্চার জন্য আলাদা গোষ্ঠীও তৈরি করে দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ধরনামঞ্চে ছাত্র-যুবদের গান শুনে আপ্লুত নেত্রী বৃহস্পতিবার ঘোষণা করেন, তাঁদের নিয়ে একটি গানের ব্যান্ড (Band) তৈরি করে দেওয়া হোক, নাম হোক ‘জয়ী’। তাঁর এই ঘোষণায় অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে কয়্যার বা গণসংগীত দলের কথা। যে দল ক্ষমতার বিরুদ্ধে নিজেদের প্রতিবাদ ছড়িয়ে দিয়েছিল স্রেফ কথা আর সুরের মধ্যে দিয়ে। যার সঙ্গে রাজনীতির তেমন কোনও যোগ প্রথমে না থাকলেও পরবর্তী কয়্যারের চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছিল বামপন্থী রাজনীতি। তবে কি তৃণমূলও (TMC) সে পথেই হাঁটছে?
রণজয় হালদার, বিশ্বজিৎ দে, ঋতুপর্ণা সিনহা, সাহেব ও সৈকত চৌধুরী – এই ৫ জনই মূলত ‘জয়ী’ ব্যান্ডের সদস্য। এরাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রেড রোডের মঞ্চে গিয়ে গানবাজনা করেছে। প্রতিবাদ মঞ্চ যে এভাবে উৎসবমুখর হয়ে উঠতে পারে, তা কে-ই বা জানত? কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (TMCP) সদস্যরা অন্য আমেজ নিয়ে এলেন। তাঁদের গান শুনেই তৃণমূল নেত্রী বলে ওঠেন, ‘‘এঁরা খুব ভাল গায়। এরপর আমাদের যখন গান হবে এদের ডেকে নিও।’’ এও বলেন, ‘জয়ী’ ব্যান্ডের প্রয়োজনীয় বাদ্যযন্ত্র কিনে দেবেন তিনি। জানান, নেত্রীর কাছে নতুন সিন্থেসাইজার আছে, সেটা দিয়ে দেবেন।
[আরও পড়ুন: দইয়ের প্যাকেটে লিখতে হবে ‘দহি’! হিন্দি চাপানোর অভিযোগে সরব তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী]
‘জয়ী’ ব্যান্ডের সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য রণজয় হালদার। তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Presidency University) প্রাক্তনী। এখন পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। এবছর টানাপোড়েনের পর প্রেসিডেন্সিতে সরস্বতী পুজোর সবুজ সংকেত পাওয়ায় রণজয়ই পৌরহিত্য করেন। এছাড়া আরেক সদস্য বিশ্বজিৎ দাসও গবেষক। এঁদের কেউ গিটার, কেউ বা অন্য বাদ্যযন্ত্র বাজাতে পারদর্শী। আর সেই পারদর্শিতাকেই এবার কাজে লাগানোর পথ প্রশস্ত করলেন তৃণমূল নেত্রী। ‘জয়ী’ ব্যান্ড তৈরির প্রস্তাব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্কৃতি চর্চার প্রবণতা যেমন প্রকাশ পেল, তেমনই তরুণ প্রজন্মকে রাজনীতিতে উৎসাহী করে তোলারও এই রাস্তা খুলে দিলেন। আর সংস্কৃতির জগতে শাসকদলের নতুন পথচলা শুরু হল।