স্টাফ রিপোর্টার: আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানবিকতার সাক্ষী থাকল শহর কলকাতা৷ রাতভর হাসপাতালের দরজায় দরজায় কড়া নেড়েও ভর্তি করাতে না পেরে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিলেন গুরুতর জখম অটোচালক পরিতোষ দে (৩৭)-র পরিবার৷ বুকে বাঁশ ঢুকে গিয়েছিল তাঁর৷ মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত ভর্তির ব্যবস্থা করান৷ এসএসকেএম-এ অস্ত্রোপচার হয় পরিতোষবাবুর৷
সোমবার রাতে ডায়মন্ড হারবার রোডে অটো চালাচ্ছিলেন পরিতোষ৷ সামনে বাঁশ বোঝাই একটি লরি চলে আসে৷ লরিটিকে ওভারটেক করতে গিয়ে আচমকাই বাঁশ ঢুকে যায় পরিতোষের বুকে৷ গুরুতর আহত পরিতোষকে ডায়মন্ডহারবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন৷
বুক এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নেননি পরিতোষের পরিবার৷ রাতেই তাঁকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়৷ কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা জানান, জটিল এই অস্ত্রোপচার শুধুমাত্র এসএসকেএম-এই সম্ভব৷ রাতেই পরিতোষকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম-এ৷ সারা রাত সে বর্হিবিভাগে ছিল৷ চিকিৎসকরা রোগীর আত্মীয়দের বলেন, জটিল এই অস্ত্রোপচারে খরচ অনেক৷ জীবনের ঝুঁকিও রয়েছে৷ অটোচালক পরিতোষের পরিবারের পক্ষে সেই টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না৷ কিন্তু ফুসফুসে ক্ষত হওয়ায় অস্ত্রোপচার শুরু করার জন্য দেরি করাও সম্ভব ছিল না৷
রাতভর এসএসকেএম চত্বরেই বসেছিল পরিতোষের পরিবার৷ সকাল হতে আর দেরি করেননি৷ হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে রওনা দেন তাঁরা৷ পরিতোষের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, টিভিতে দেখেছি উনি বলতেন ক্ষমতায় নয়, মানুষের মাঝখানে থাকতে চাই৷ তাই ভাবলাম সাহায্য চেয়েই দেখি৷ সকাল সাতটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে আসে পরিতোষের পরিবার৷ জেড ক্যাটেগরির নিরাপত্তা টপকে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে প্রবেশ সোজা কথা নয়৷ পরিতোষের পরিবারের লোকেদের আকুতি, একটিবার মমতার সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে৷
বাইরে জটলা দেখে নিজেই বেরিয়ে আসেন মমতা৷ অর্থের জন্য অস্ত্রোপচার আটকে! দু’মিনিট দেরি করেননি মুখ্যমন্ত্রী৷ নির্মল মাজিকে বলেন, দ্রুত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে৷ ফোন করেন এসএসকেএম-এর ডিরেক্টরকেও৷ মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়ে শুরু হয় অস্ত্রোপচার৷ ধন্যবাদ দিয়েছেন? পরিতোষের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, জীবন বাঁচলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় ধন্যবাদ, বলেছেন মমতা৷
The post মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জখম যুবকের চিকিৎসা appeared first on Sangbad Pratidin.