অভিরূপ দাস: রাজ্যের কোভিড (COVID-19)গ্রাফ নিয়ে চিন্তা কমেছে অনেকটাই। এর মাঝে আচমকা উত্তরবঙ্গে ‘অজানা’ জ্বরের প্রকোপ চিন্তা বাড়াচ্ছিল। তবে এবার তা নিয়ে খুব একটা উদ্বেগের কিছু নেই বলেই আশ্বস্ত করল রাজ্য প্রশাসন। কারণ, ভাইরাসটি চিহ্নিত করা হয়েছে ইতিমধ্যে। বৃহস্পতিবার এসএসকেএম (SSKM)হাসপাতালে একঘণ্টার স্বাস্থ্যবৈঠক শেষে এমনই জানালেন স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রধান সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগম।
কলকাতার ৫ হাসপাতালের পরিকাঠামো নিয়ে এদিন এসএসকেএমে বৈঠক হয়। অংশ নেন পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষরা। বৈঠক শেষে প্রধান সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ভাইরাস চিহ্নিত করা গিয়েছে। কিন্তু কী ধরনের ভাইরাস এবং তা সামাল দিতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে। যে কটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তার কারণ অন্য। রোগ চিহ্নিত হয়েছে। পরিকাঠামোও যথেষ্ট, ওষুধও পাঠানো হয়েছে। সবকিছু পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। আজই চিকিৎসা পদ্ধতি জানাতে SOP প্রকাশ করবে স্বাস্থ্যদপ্তর।
[আরও পড়ুন: ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প বন্ধের দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ডিলাররা]
উত্তরবঙ্গে শিশুদের মধ্যে ‘অজানা’ জ্বরের নেপথ্যে রয়েছে আরএস ভাইরাস (RS Virus)। জ্বরের প্রকোপ ছড়াতেই স্বাস্থ্যদপ্তর তড়িঘড়ি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিল। তাতে আরএস ভাইরাসকেই ভিলেন বলে চিহ্নিত করা গিয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের এই সাফল্যের প্রশংসা করেছে প্রশাসন। তবে জ্বরের কারণ কী, তা খতিয়ে দেখে দ্রুত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে এদিন সকালেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) খোঁজখবর নিয়েছেন। জানতে পেরেছেন, কোনও অজানা জ্বর নয়, এমনি সাধারণ জ্বরেই আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তারা সকলেরই অন্য জটিল অসুখ ছিল। হাসপাতালে নিয়ে আসা হলেও চিকিৎসার কোনও সুযোগ হয়নি।
[আরও পড়ুন: নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে প্রকাশ করা হবে TET-এর উত্তরপত্র, পুজোর আগেই ফলপ্রকাশের সম্ভাবনা]
এদিনের বৈঠকে এই সংক্রান্ত আলোচনা ছাড়াও কলকাতার ৫ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামোর আরও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু কলকাতাই নয়, সংলগ্ন জেলাগুলি থেকেও প্রচুর মানুষজন এসব হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। অন্তত ৭৬ শতাংশ মানুষ এর উপর নির্ভরশীল। আরও কীভাবে এসব হাসপাতালের পরিকাঠামো ঢেলে সাজানো যায়, শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি করা যায় এবং মেডিক্যাল কলেজের আসন সংখ্যাও বাড়ানো যায়, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
এদিকে, প্রশাসনের নির্দেশের পরই কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্যদপ্তর। কলকাতা মেডিক্যালে আরও ২০ টি বেড বাড়ানো হয়। অন্যান্য জেলা হাসপাতালগুলিতেও বেড বাড়ানোর তোড়জোড় চলছে। স্বাস্থ্যদপ্তরের আশ্বাস, পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণেই আছে। উদ্বেগের কিছু নেই।