টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: শেষ মুহূর্তে জেলা সফরসূচিতে রদবদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। অমিত শাহর সফরের পালটায় সোমবার বাঁকুড়া (Bankura) যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। সেদিন সেখানে প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠক এবং পরেরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার জনসভার কথা ছিল। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে থাকার কথা ছিল। কিন্তু রাতারাতিই এই সূচি বদলে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলেই বাঁকুড়া পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাতে থাকবেন মুকুটমণিপুরে সেচদপ্তরের বাংলোয়। এরপর সোমবার জনসভা করবেন। মঙ্গলবার প্রশাসনিক বৈঠক, বুধবার আরও একটি জনসভা সেরে কলকাতায় ফিরে আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবার বেলার দিকেই এই সূচি বদল করে তিনি রওনা দেন বাঁকুড়ার উদ্দেশে।
মুখ্যমন্ত্রীর বাঁকুড়া সফরের নতুন সূচি অনুযায়ী, সোমবার দুপুর ১টা নাগাদ খাতড়ার সিধো-কানহো স্টেডিয়ামে জনসভা করবেন। মঙ্গলবার দুপুর ৩টে নাগাদ বাঁকুড়ার রবীন্দ্রভবনে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বসবেন পর্যালোচনা বৈঠকে।
আগে এটি হওয়ার কথা ছিল খাতড়ার গুরুসদয় স্টেডিয়ামে। এরপর বুধবার বাঁকুড়া ১ নং ব্লকের শুনুকপাহাড়ি হাট ময়দানে দলীয় সভা করার কথা। এছাড়া জেলার দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গেও আলোচনার সূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। তাঁর সফর ঘিরে তাই প্রস্তুতি তুঙ্গে জেলায়।
[আরও পড়ুন: বঙ্গে ফিরছে শীতের আমেজ, আগামিকাল একধাক্কায় ৪-৫ ডিগ্রি নামতে পারে তাপমাত্রার পারদ]
তবে শীতের ঠিক আগে এই মুহূর্তে পর্যটনের মরশুম। মুকুটমনিপুর-সহ বাঁকুড়ার নানা জায়গায় পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই রয়েছে। হোটেলগুলিই পূর্ণ। মুখ্যমন্ত্রীর সফরকালীন তাঁদের যেন কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকেও নজর ছিল তাঁর। সেইমতো স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তরফেও আশ্বস্ত করা হয়, পর্যটকদের এ বিষয়ে বিচলিত হতে হবে না।
[আরও পড়ুন: ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়’, গরুপাচার ও কয়লা কাণ্ড নিয়ে রাজ্যকে খোঁচা ধনকড়ের]
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, চলতি মাসের ৫ তারিখ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বাঁকুড়া সফর, আদিবাসী পরিবারে খাওয়াদাওয়া এবং জনসংযোগের পর থেকে বাঁকুড়াকে আলাদা গুরুত্ব দিচ্ছে শাসকশিবিরও। তাই আগামী দু’দিনে মুখ্যমন্ত্রীর ম্যারাথন কর্মসূচি। একইদিনে জনসভা, প্রশাসনিক বৈঠক, আবার পরেরদিন জনসভা। এমনিতেও উনিশের লোকসভা ফলাফলের পর জঙ্গলমহলের জেলাগুলির দিকে বাড়তি নজর দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একুশের লড়াইয়ের বেশি বাকি নেই। তার আগে তাই জেলাসফরে গিয়ে জনসংযোগ আরও জোরদার করার কাজটা শুরুই করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর এই সফর নিয়ে যথারীতি কটাক্ষ শুরু করেছে বিজেপি। বিষ্ণুপুরের সাংসদ তথা বিজেপি যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁ’র কটাক্ষ, “কলকাতায় ঘুম আসছে না মুখ্যমন্ত্রীর। তাই বাঁকুড়ায় ঘুমোতে আসছেন। সরকারি টাকা ধ্বংস করছেন। আমরা ওই দিন বাঁকুড়ায় মোড়ে–মোড়ে কালো পতাকা বাঁধব। স্লোগান দেব – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বৈরাচারী সরকার নিপাত যাক।”