সংবাদ প্রতিদিন ডিজি়টাল ডেস্ক: দিল্লিতে দোস্তি আর বাংলায় কুস্তি চলবে না। পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ের পর কংগ্রেসকে কড়া বার্তা তৃণমূল সভানেত্রীর। সাফ জানিয়ে দিলেন, “এখানে আমাকে গালাগাল করবেন, আর দিল্লিতে আপনাকে নৈবেদ্য় সাজিয়ে দেব!” চব্বিশের লোকসভার আগে মমতার এই বার্তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
লোকসভায় বিজেপিবিরোধী জোট একসসঙ্গে লড়ছে কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বামেরা। ইতিমধ্যে সেই বিরোধী জোট নিয়ে একদফা বৈঠকও হয়ে গিয়েছে। এর মধ্য়ে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বেজেছে। সময় যত গড়িয়েছে ততই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। চোখা চোখা প্রশ্নবাণে নিশানা করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে। এমনকী, কংগ্রেসের হাতে একাধিক তৃণমূল কর্মী খুনও হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই পুরো বিষয়টিকে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালভাবে নিচ্ছেন না তা তিনি আগেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেম। নির্বাচন মেটার পরও সেকথা আরও একবার স্পষ্ট করে দিলেন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, কংগ্রেসের দ্বিচারিতা চলবে না। বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে সরাতে কংগ্রেসের পাশে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল। কিন্তু রাজ্যে মমতাকে গদিচ্যুত করতে বকলমে বিজেপিকে সমর্থন চলবে না।
[আরও পড়ুন: ‘অপরাধ করলে শাস্তি দিন, মাথা পেতে নেব’, হাতজোড় করে আরজি মমতার]
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তৃণমূলের এই কড়া বার্তার পিছনে ভোটের অঙ্ক রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোটে গোটা রাজ্যে শাসকদল সামান্য কিছুটা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে শুধু সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দুই জেলা মালদহ এবং মুর্শিদাবাদে খানিকটা হলেও ‘প্রতিরোধ’ গড়তে পেরেছে বাম ও কংগ্রেস। নির্বাচন প্রক্রিয়ার একেবারে শুরু থেকে রাজ্যের যে যে এলাকায় অশান্তি সবচেয়ে বেশি হয়েছে, সেগুলিও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেটা মুর্শিদাবাদ হোক, মালদহ হোক, ভাঙড় হোক বা উত্তর দিনাজপুর। ভোটের ফলেও দেখা যাচ্ছে বিচ্ছিন্নভাবে হলেও এই এলাকাগুলিতে ভাল করেছে বাম-কংগ্রেস জোট। সিপিএম (CPIM) এবং কংগ্রেসের (Congress) দাবি, রাজ্যের সংখ্যালঘু মন যে বদলাচ্ছে, পঞ্চায়েতের ফলাফলে তাঁর ইঙ্গিত মিলছে। রাজনৈতিক মহল বলছে, এই ভোট কাটাকাটির সুবিধা পেতে পারে বিজেপি। যদিও তৃণমূল এধরনের অঙ্ক মানতে রাজি নয়। সে ভোটের অঙ্ক যাই হোক না কেন, সংখ্যালঘু এলাকায় ভবিষ্যতে কংগ্রেস সমস্যা তৈরি করতে পারে তা ভালই বুঝতে পারছে তৃণমূল।