সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারিতে রাজ্য রাজনীতিতে চাপানউতোর। ইতিমধ্যে তাঁর গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব শঙ্কুদেব পণ্ডা। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রমাণের আগেই নুসরতকে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে বলেই দাবি তাঁর।
বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফ্ল্যাট কেলেঙ্কারি নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করেন নুসরত জাহান। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দেন তিনি। তার কিছুক্ষণের মধ্যে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পালটা আক্রমণ করেন শঙ্কুদেব পণ্ডা। চেক নম্বর উল্লেখ করে বিজেপি নেতার দাবি, “দফায় দফায় কোম্পানি থেকে টাকা তুলেছেন নুসরত। এমনকী যে লোন অ্যামাউন্টের কথা তিনি বলছেন তার থেকে অনেক বেশি টাকা তুলেছেন। যে কোম্পানির ডিরেক্টর তিনি সেখান থেকে কীভাবে লোন নিলেন? আসলে ফ্ল্যাট বানানোর নাম করে টাকা তোলেন। প্রতারণার সব টাকা সাইফন হয়েছে। সেই টাকাতেই ফ্ল্যাট কিনেছেন নুসরত। ফ্ল্যাটের দলিলে কবে, কত টাকা নিয়েছেন, তা জানিয়েছেন সাংসদ অভিনেত্রী। তাতেই রয়েছে প্রমাণ।”
[আরও পড়ুন: করম পুজো এবং শববরাতেও রাজ্যে ছুটি ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
নুসরতকে গ্রেপ্তারির দাবি তুলে শঙ্কুদেব পণ্ডা আরও বলেন, “মেসার্স সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেডের নামে ২০১৪ সালে যখন টাকা তোলা হয়েছিল, তখন সেখানকার ডিরেক্টর পদে ছিলেন নুসরত। যে মুহূর্তে আমানতকারী-ক্রেতারা টাকা চাইতে শুরু করলেন সেই সময়ই পদত্যাগ করলেন। এটা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত। উনি বলছেন এরপর কোম্পানিতে কী হয়েছে উনি জানেন না। তা আমরা শুনতে চাই না। জনপ্রতিনিধি হিসেবে উনি দায় এড়াতে পারেন না। এই প্রবীণ অসহায় মানুষেরা কবে টাকা ফেরত পাবে তা জানাতে হবে। জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন কাজ কেন করেছেন? সাংসদকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক। নিজেই বলছেন ২০১৭ সাল পর্যন্ত সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন, অথচ বলছেন কী হয়েছে জানিনা। কেন একটা কোম্পানি ২৪-২৫ কোটি টাকা তুলল, তা ডিরেক্টর জানেন না? কী করে সম্ভব?”
এদিকে নবান্নে বসে মমতা এই প্রসঙ্গে প্রথমে কিছু বলতে চাননি। পরে যদিও তিনি বলেন, “এটা ওদের নিজেদের বিষয় সেটা ওরা নিজেরাই বলবে। কিন্তু প্রমাণের আগেই দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া হচ্ছে। ডিরেক্টর তো অনেকেই থাকে। নুসরত যদি কোনও জায়গার ডিরেক্টর হন তাহলে ওরকম ডিরেক্টর তো অনেক আছে।” এরপর নাম না করে গেরুয়া শিবিরের এক সাংসদের বিরুদ্ধে আঙুন তোলেন মমতা। বলেন, “ওদের ও তো কে একজন সাংসদ আছে যার বিরুদ্ধে ইডিতে অভিযোগ রয়েছে। যিনি বিদেশেও গিয়েছিলেন চিটফান্ডের মালিকের সঙ্গে। আমি নাম বলব না। তাঁর বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না?” এই অভিযোগের জল কোন দিকে গড়ায়, সেটাই এখন দেখার।