ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ১৬ দিন পরে উত্তরকাশীর (Uttar Kashi) সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধার হয়েছেন আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক। বিদেশি অগার যন্ত্র এনে উদ্ধারকাজ শুরু হলেও সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। শেষ পর্যন্ত ‘নিষিদ্ধ’ র্যাট-হোল মাইনিং পদ্ধতিতে তাঁদের বের করে আনা হয়। সেই পদ্ধতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, বেআইনি হলেও এই পদ্ধতির হয়ে সরব হয়েছিলেন তিনি। সুড়ঙ্গ খোঁড়ার এই পদ্ধতি যেন একেবারে বাতিল না করা হয়, সেটাই বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বেআইনি মাইনিং করে উদ্ধার করা হল উত্তরকাশীতে আটকে পড়া শ্রমিকদের। র্যাট-হোল মাইনিং পদ্ধতি মেনেই সাফল্য মিলেছে সুড়ঙ্গের মধ্যে। মমতার কথায়, “আমি বলেছিলাম, এটা বন্ধ কোরো না। ইললিগ্যাল হলেও কাজে লাগল তো?” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিদেশি যন্ত্র বা বিশেষজ্ঞদের আনা হলেও শ্রমিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শেষ পর্যন্ত দেশীয় নিষিদ্ধ পদ্ধতি মেনেই বের করে আনা হয় ৪১ জনকে।
[আরও পড়ুন: বিধানসভায় গরহাজির প্রথম ৭ প্রশ্নকর্তাই, শাসকদলের উপর ‘ক্ষুব্ধ’ স্পিকার]
উল্লেখ্য, নিরাপত্তার অভাবে র্যাট হোল মাইনিং নিষিদ্ধ করেছিল জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যাল। ভূমি ক্ষয়, বনভূমি ধ্বংস, স্থানীয় বাস্তুতন্ত্রের ব্যাঘাতের মতো পরিবেশগত বিপদ দেখা দেয় এই পদ্ধতিতে। ব়্যাট-হোল মাইনিং-এর ফলে মেঘালয়ের খনি থেকে অ্যাসিডের স্রোত ভারতের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশের নদীগুলিরও ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ। তবে ৪১ জনকে বাঁচাতে এই নিষিদ্ধ পদ্ধতির সাহায্যই নিতে হয়েছে উদ্ধারকারীদের।
উত্তরকাশীর বিপর্যয় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেভাবে কিছু না বললেও বিজেপিকে দায়ী করে সরব হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। একটি সংবাদপত্রের খবর শেয়ার করে তৃণমূল বলে, “উত্তরকাশীতে সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের জন্য দায়ী বিজেপিই (BJP)। অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার পরিকল্পনা হয়েছে, দূরদর্শিতার অভাবও ছিল এই প্রকল্পে। হিমালয় পর্বতমালায় আদৌ এই ধরণের কাজ চালানো সম্ভব কিনা, সেই বিষয়টিও একেবারেই ভেবে দেখা হয়নি। নিজেদের লাভ বাড়ানোর জন্য শ্রমিকদের ন্যূনতম সুরক্ষার ব্যবস্থাও ছিল না।” তৃণমূলের প্রশ্ন, আর্থিক লাভের জন্য সাধারণ মানুষকে আর কতদিন এইভাবে বলি দেওয়া হবে?