ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ইন্ডিয়া জোট ইস্যুতে এবার কংগ্রেসকে নজিরবিহীন আক্রমণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দেশজুড়ে ৩০০ আসনে লড়াই করে ৪০টি আসনও হাতশিবির জিততে পারবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তোপ দাগলেন সিপিএমের বিরুদ্ধেও।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনায় প্রতিবাদে রেড রোডে ৪৮ ঘণ্টার ধরনায় বসেছেন মমতা। সেই মঞ্চ থেকেই এদিন ইন্ডিয়া জোট শরিক কংগ্রেসকে একহাত নেন তিনি। বলে দেন, বাংলায় কংগ্রেসকে দুটি আসন দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তৃণমূলই তাদের জিতিয়ে দিত। কিন্তু কংগ্রেস তাতে রাজি হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমরা তো কংগ্রেসকে বলেছিলাম তোমরা ৩০০ আসনে লড়াই করো। বাকি আসনে আমরা লড়াই করবো। সেটা করল না। প্রথমেই চলে এল বাংলা। কংগ্রেস, তুমি ৪০টা আসন পাবে কি না জানি না, সারা ভারতে ৩০০টা আসনে লড়াই করে। তুমি বাংলা না বেছে ইউপিতে (উত্তরপ্রদেশ) গেলে না কেন? তুমি ইউপিতে গিয়ে হারিয়ে এসো। বারাণসীতে গিয়ে হারিয়ে এসো। রাজস্থানে গিয়ে হারিয়ে এসো। বুকের পাটা দেখতাম। জেতা জায়গা হেরেছ।”
[আরও পড়ুন: প্রযুক্তিতেই সাফল্য, এই পদ্ধতিতে ধরা পড়ল মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস করা ‘দোষী’রা]
এরপরই ফের রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রাকে নিশানা করেন তিনি। এমনকী এই যাত্রায় প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির ক্রিয়াকলাপ নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “সামনে ভোট। তাই এখন আবার বসন্তের কোকিল চলে এসেছে। নতুন করে ফটোশুট হচ্ছে। বাচ্চাদের আদর করছে। বিড়ি বাঁধছো? বিড়ি খাও নাকি অন্য কিছু খাও সে আমি বলতে পারবো না। খেতেই পারে।” প্রশ্ন তোলেন, মণিপুর যখন অশান্ত হয়েছিল, তখন কোথায় ছিল কংগ্রেস?
উল্লেখ্য, বাংলায় একলা চলোর ডাক দিলেও ইন্ডিয়া জোটে রয়েছে তৃণমূল, একথা আগেও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উলটোদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী তৃণমূল সরকারকে বারবার আক্রমণ করলেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব মমতা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সুর চড়ায়নি। তারা এখনও জোটে বিশ্বাসী। শুক্রবার দুপুরে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন রাহুল। তিনি জানান, এই ভিডিও ন্যায় যাত্রা পর্বে তোলা। যেখানে কয়েকজন অল্পবয়সি তরুণ-তরুণী কিছু প্রশ্ন করেছিলেন তাঁকে। সেই প্রশ্নের জবাবেই রাহুলকে বাংলায় জোট প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে শোনা যায়। বাংলায় ইন্ডিয়া জোট নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে রাহুল বলেন, ‘‘জোট নেই, এ কথা আমরাও বলছি না, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলছেন না। জোট নিয়ে কথাবার্তা এবং আলোচনা চলছে। শীঘ্রই এর সমাধানও হবে।’’ বীরভূমে জয়রাম রমেশেরও বক্তব্য, বিজেপিকে সবাই হারাতে চায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই লড়াইয়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মুখ। তবে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী রাহুলকে আক্রমণ করলেন, তাতে ইন্ডিয়া জোট কতটা ঐক্যবদ্ধভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামবে, তা নিয়ে সন্দীহান রাজনৈতিক মহল।
তবে শুধু কংগ্রেস নয়, সিপিএমকেও তুলোধোনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলে দেন, “সিপিএম কখনও বিজেপির বিরোধিতা করতে পারত না, করতও না। মুখে বলত বঞ্চনার কথা। আবার দিল্লি গিয়ে টাকা নিয়ে আসত। আজ আবার কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে মুসলমান ভোট নিচ্ছে। এই সিপিএম বিজেপির সবচেয়ে বড় বন্ধু।”