সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংঘাত চরমে উঠেছিল অনেক আগেই। কিন্তু এবার তা মাত্রা ছাড়িয়েছে। এমনটাই মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই রাজ্যপাল পদে জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankar) অপসারণ চেয়ে এবার সরাসরি রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখছেন তিনি। সুত্রের খবর, রাজ্যপালের অপসারণ বিষয়ে এবারে সত্যিই ‘সিরিয়াস’ মমতা। এমনকী প্রয়োজনে বিধানসভায় তাঁর অপসারণের দাবিতে প্রস্তাবও পেশ করতে পারে তৃণমূল কংগ্রেস।
জগদীপ ধনকড় এরাজ্যের রাজ্যপাল হয়ে আসার পর থেকেই কার্যত সরকার বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। একেবারে শুরু থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতা সরকারের বহু নীতি নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। বিশেষ করে বিধানসভা ভোটের আগে একেবারে নিয়ম করে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন তিনি। যা নিয়ে বারবার প্রতিবাদ করেছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি ছিল, বিজেপি নেতাদের ভাষায় কথা বলছেন ধনকড়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর ধনকড়ের রাজ্য সরকারের প্রতি ‘ক্ষোভ’ যেন আরও বেড়েছে। নজিরবিহীনভাবে মুখ্যমন্ত্রীর শপথের দিনও ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তাঁকে খোঁচা দিয়েছেন ধনকড়। একই কাণ্ড তিনি ঘটিয়েছেন মন্ত্রীদের শপথের দিনও।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা দেখে ব্যথিত রাজ্যপাল, পালন করবেন না জন্মদিন]
তবে, রাজ্যপালের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভ চরমে উঠেছে দুটি ঘটনায়। প্রথমত, রাজ্য সরকারের অনুমতি না নিয়ে তিনি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিলেন ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ খতিয়ে দেখতে। এবং দ্বিতীয়ত তৃতীয় মন্ত্রিসভার শপথের ঠিক আগে তিনি রাজ্যের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের বিরুদ্ধে নারদ মামলায় পদক্ষেপ করার অনুমতি দিয়ে দেন। যার জেরে গতকাল রাজ্যের দুই মন্ত্রী, এক বিধায়ক ও এক প্রাক্তন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। গতকাল যখন তৃণমূল কর্মীরা সিজিও (CGO) কমপ্লেক্সের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন, তখনও রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। এমনকী, সিজিও কমপ্লেক্সে থাকাকালীনই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেন বলে সুত্রের খবর। দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়।
[আরও পড়ুন: অসুস্থ নারদ কাণ্ডে ধৃত মদন ও শোভন, ভরতি এসএসকেএম হাসপাতালে]
সুত্রের খবর, এরপরই ধৈর্যের বাঁধ ভেঙেছে মুখ্যমন্ত্রীর। এবার রাজ্যপালকে অপসারণের ব্যাপারটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তিনি। প্রথমে তিনি প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতিকে চিঠি লিখবেন। তারপর রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালের অপসারণের দাবিতে প্রস্তাবও পাশ করাবে তৃণমূল। এই রাজ্যপালকে ‘বয়কট’ করার ডাকও দেওয়া হতে পারে। যেমন হয়েছিল জ্যোতি বসুর নেতৃত্বে বামফ্রন্ট আমলে এ পি শর্মার ক্ষেত্রে।