ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা তথা ডিএ নিয়ে মামলার পর মামলা হচ্ছে আদালতে। ধৈর্য্য হারিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সরকারি কর্মীরা। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি কর্মীদের কিছুটা হলেও ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিলেন কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বললেন, “মুখ্যমন্ত্রী সঠিক সময় ডিএ (DA) দেবেন। তবে আরেকটু ধৈর্য ধরুন।”
শনিবার বিধানসভায় ডিএ মামলা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়ে মন্ত্রীর জবাব, “সঠিক সময় মুখ্যমন্ত্রী সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা দেবেন। মমতা চান সরকারি কর্মীরা ভাতা পান। তবে মুখ্যমন্ত্রীকে সাধারণ মানুষের কথাও ভাবতে হয়। তিনি রাজ্যে গরিব মানুষের কথা মাথা রেখে বেশ কিছু প্রকল্প চালু করেছেন। তাঁদের কথাই আগে ভাবতে হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী যে কতটা মানবিক সে প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, “যাঁরা ডিএ পাচ্ছেন না, তাঁরা দু’বেলা দু’মুঠো খেতে পান। কিন্তু যাঁদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী প্রকল্পগুলি করেছেন, তাঁরা প্রতিদিন বাজারে যেতে পারেন না। দু’বেলা হয়তো ঠিকমতো খেতেও পান না। তাই মুখ্যমন্ত্রী সেই সব মানুষের কথাও ভাবছেন।’’
প্রসঙ্গত, ২০ মে কলকাতা হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্যকে। কর্মীদের এই মুহূর্তে ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে হবে সরকারকে। কিন্তু কেন্দ্র তাদের কর্মীদের ডিএ ৩৪ থেকে ৩৮ শতাংশ করে দেওয়ার পরেই, রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা ৩৫ শতাংশ ডিএ-র দাবিতে সরব হয়েছেন। অন্যদিকে, নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরও ডিএ না দেওয়ায় হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা হয়। আবার ডিএ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। কিন্তু সে আরজি খারিজ হয়ে যায়। শুক্রবার ডিএ নিয়ে রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দায়ের করে।
দায়ের করা হয়েছে স্পেশ্যাল লিভ পিটিশন। তাতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে ডিএ দিতে হলে রাজ্য বড়সড় আর্থিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তাই তা দেওয়া এখনই সম্ভব নয়। তবে রাজ্য শীর্ষ আদালতে যাওয়ার আগেই ক্যাভিয়েট দাখিল করেছিল ডিএ প্রাপক কর্মচারী সংগঠন। এদিন লিভ পিটিশনের কপি কর্মী সংগঠনগুলির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে খবর।