ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বকেয়া প্রাপ্তি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন চলছেই। ১০০ দিনের টাকা পেতে কার্যত কেন্দ্রের দুয়ারে বারবার করাঘাত করতে হচ্ছে রাজ্যকে। এই অবস্থায় তিতিবিরক্ত রাজ্য, পালটা কেন্দ্রও বিস্তারিত তথ্য পেতে অনড়। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ এত দেরিতে পাওয়ায় কাজে অনেকটা প্রভাব পড়ছে, এই যুক্তিতে সরব রাজ্যের নেতা, মন্ত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে, দেখা করে বকেয়া মেটানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু নতুন বছরেও তা মিলবে কিনা, জানা নেই। তবে এখনই বকেয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে (PM Narendra Modi) কিছু বলবেন না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কারণ, সদ্য মাতৃহারা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই শোকের সময় কোনও রাজনৈতিক আলোচনা চান না, সোমবার এমনই জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)।
সোমবার নজরুল মঞ্চে বিশেষ কর্মী সম্মেলন ছিল তৃণমূলের। জনসংযোগ আরও নিবিড় করতে ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ নামে একটি প্রকল্পের উদ্বোধন হয়েছে। তার ঠিক আগে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বেশ কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করেন। নতুন বছরে রাজ্যের বকেয়া নিয়ে কি ফের কেন্দ্রের কাছে যাবেন? এই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টই বলেন, ”প্রধানমন্ত্রীকে তো আগেই চিঠি দিয়েছি এ বিষয়ে। ওঁর এখন ব্যক্তিগত শোকের সময়, এখনই আর কিছু বলব না।”
[আরও পড়ুন: নোটবন্দি বৈধ হলেও বাজারে ঊর্ধ্বমুখী নগদ, ৬ বছরে বৃদ্ধি রেকর্ড ৮৩ শতাংশ]
এরপর অবশ্য তিনি ফের বকেয়া নিয়ে সরব হন। বলেন, ”তবে সেদিন মিটিংয়ে বলেছি, ৬০০০ কোটি টাকা ডিউ রয়েছে। গরিব মানুষ কাজ করছে, টাকা পাচ্ছে না। মার্চে কাজ হলে ডিসেম্বরে টাকা পাঠাচ্ছে। তাহলে তার টেন্ডার হবে কখন? এটা তো নন কো-অপারেশন। আমরা ফেডেরালিজমের কথা বলছি।”
[আরও পড়ুন: জিনস-টপ, মুখে চৌখস ইংরেজি, পকেটমার ‘গুলাব গ্যাং’য়ের কীর্তিতে তাজ্জব পুলিশ]
গত ৩০ ডিসেম্বর বঙ্গে ‘বন্দে ভারত’ এক্সপ্রেস সূচনার ঠিক আগে,ওইদিন ভোররাতে প্রয়াত হন প্রধানমন্ত্রীর মা। তা সত্ত্বেও ওই অনুষ্ঠানে ভারচুয়ালি উপস্থিত ছিলেন নরেন্দ্র মোদি। আর হাওড়া স্টেশনের অনুষ্ঠানে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ”জানি এটা আপনার ব্যক্তিগত শোকের সময়। আপনার মা মানে আমারও মা। আপনি এখন বিশ্রাম নিন।” তখনই বোঝা গিয়েছিল, প্রধানমন্ত্রীর দুঃসময়ে মুখ্যমন্ত্রী কতটা সহমর্মী ছিলেন। সোমবারও তা বোঝা গেল। রাজ্যবাসীর মুখ চেয়েও তিনি মাতৃহারা প্রধানমন্ত্রীকে এখনই এসব বিষয়ে বলতে চান না।