সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রশাসনিক প্রধান বলে দায়িত্ববোধ তাঁর আরও খানিকটা বেশি। যে কোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় নিখুঁত পরিকল্পনা, জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে কাজের ব্লুপ্রিন্ট সাজিয়ে দেওয়ার পরও সরাসরি ময়দানে নেমে নজরদারি তাঁর বরাবরের অভ্যেস। এবারও তার ব্যতিক্রম হল না। বাংলা, ওড়িশার উপকূলে আজ রাতের মধ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় 'ডানা'(Cyclone Dana) আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) জানালেন, রাতে তিনি নিজেই নবান্নে থেকে গোটা পরিস্থিতিতে নজর রাখবেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানান তিনি। সেইসঙ্গে যাবতীয় প্রয়োজনীয় সতর্কতার কথা মনে করিয়ে দেন সকলকে।
২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে প্রশাসনিক কাজকর্মে বিপুল পরিবর্তন এসেছে। তার অন্যতম মূল কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান হওয়ার পর তাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত বেশ কিছু সিদ্ধান্ত। তাতে বদলেছে কাজের ধরন। যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কার্যত ঝাঁপিয়ে পড়েন। এর আগে বাংলায় আছড়ে পড়া যাবতীয় বিপর্যয়ের সময় তিনি রাত জেগে নজরদারি চালান। বিপর্যয় মোকাবিলায় নবান্নের কন্ট্রোলরুমে আধিকারিকদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কাজ করেন মমতা নিজেও। মনিটরে চোখ রেখে সর্বক্ষণ বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করেন, পরিস্থিতি কতটা প্রতিকূল। সেইমতো বাতলে দেন দুর্যোগ সামলানোর উপায়ও।
ডানা সামলাতে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে ব্যস্ততা। ছবি: অরিজিৎ সাহা।
তাই যে কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের রাত্রি জাগরণ এখন রাজ্যবাসীর কাছে পরিচিত দৃশ্য। এবার পুজো কাটতেই ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় 'ডানা'। প্রতিবেশী ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামরা বন্দরের মাঝে ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল হওয়ার কথা থাকলেও লাগোয়া পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় জারি হাই অ্যালার্ট। 'ডানা'র ঝাপটানিতে ক্ষতি হতে পারে সেখানকার বিস্তীর্ণ এলাকা। এছাড়া বিপদের আশঙ্কা দুই ২৪ পরগনার উপকূলীয় অঞ্চলে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ''রাতে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে থাকব। নাইটটা টোটাল আমি ওয়াচ করছি। নবান্নে হেল্পলাইন নং খোলা থাকবে। নম্বর - ০৩৩-২২১২৩৫২৬, ১০১৭০।'' জনতার প্রতি তাঁর বার্তা, ''অযথা ভয় পাবেন না। গুজবে কান দেবেন না। কুৎসা বা প্ররোচনায় কান দেওয়ার দরকার নেই। তবে সতর্ক থাকতে হবে সকলকে। আর ঝড়বৃষ্টি না থামলে সমুদ্রে যাওয়া বা বাড়ি থেকে বেরনো বারণ। এর পর আবার চাষিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ থাকবে।'' এদিন রাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নবান্নে রাত জেগে পরিস্থিতি নজরে রাখবেন স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীও।