দীপঙ্কর মণ্ডল: লকডাউন পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েছেন বাংলার বহু শ্রমিক, কর্মী। তাঁরা ঘরে ফিরতে পারছেন না। কাজ করতে গিয়ে ভিনরাজ্যের আটকে পড়া এসব শ্রমিকদের যাতে অসুবিধা না হয়, সেদিকে দেখভালের আবেদন জানিয়ে ১৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ২১ দিন তাঁদের খাবার, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করার আবেদন জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিটি রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিকদের তালিকা তৈরি করে পাঠালেন। তাঁর চিঠি পাওয়ার পরই ব্যবস্থা নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন বলে নবান্ন সূত্রে খবর।
করোনা ভাইরাসের স্টেজ থ্রি বা তৃতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ যথাসম্ভব রুখে দিতে ১৪ মার্চ পর্যন্ত দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বন্ধ রেল ও সমস্ত গণপরিবহণ। পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বুঝে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগেই নিজের নিজের বাড়ি ফেরার পরিকল্পনা করেছিলেন ভিন রাজ্যে কাজ করতে যাওয়ার বাংলার শ্রমিকরা। কিন্তু ২৪ তারিখ মাঝরাত থেকে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করে দেওয়ায় বাড়ি ফেরা স্থগিত হয়ে গিয়েছে তাঁদের।
[আরও পড়ুন: করোনায় ঘরবন্দি জীবন, বই পড়ে-রান্না করে সময় কাটছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের]
একই অবস্থা অন্য রাজ্য থেকে এরাজ্যে কাজ করতে আসা শ্রমিকদেরও। তাঁরাও বাড়ি ফিরতে পারেননি। দু’পক্ষের কথা বিবেচনা করেই আজ ১৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাতে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে আটকে পড়া শ্রমিকদের সাহায্যার্থে যেন এগিয়ে আসে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলি। তাঁদের খাবার, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করা হয়। যেমনটা তিনি নিজেও এখানে আটকে পড়া ভিনরাজ্যের কর্মীদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন।
নবান্ন সূত্রে খবর, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক-সহ মোট ১৮ টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের এই আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন মমতা। সেইসঙ্গে কোন রাজ্যে কত শ্রমিক আটকে রয়েছেন, তাঁদের পরিচয়-সহ তালিকাও পাঠানো হয়েছে। বাংলার মুখ্যমমন্ত্রীর চিঠি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই পদক্ষেপ নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার। সূত্রের খবর, উদ্ধব ঠাকরে নিজে উদ্যোগ নিয়ে মহারাষ্ট্রে আটকে থাকা বাংলার শ্রমিকদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করেছেন। তাঁদের কাছে যাতে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পৌঁছে যায়, সরকারকে সেই নির্দেশও দিয়েছেন। এই মুহূর্তে মহারাষ্ট্রের করোনা পরিস্থিতিই সবচেয়ে উদ্বেগজনক। সেখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাঁকে আশ্বস্ত করেছেন আরও কয়েকটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। নিজের এই পদক্ষেপে আবারও বুঝিয়ে দিলেন, দুঃসময়ে তিনিই প্রকৃত জননেত্রী।
[আরও পড়ুন: করোনা যুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া, সাহায্যের হাত বাড়ালেন শহরের পুজোওয়ালারা]
The post আটকে পড়া বাংলার শ্রমিকদের সাহায্যের আবেদন, ১৮ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.