জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: অবহেলার অভিযোগে বিজেপি বিধায়কদের দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি। তারই মধ্যেই সুব্রত এবং শান্তনু ঠাকুরকে ঘাসফুল শিবিরে ফেরার আহ্বান জানালেন মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর (Mamata Bala Thakur)। যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি সুব্রত ঠাকুর। তবে কি বিজেপির মতুয়া ভোটই টার্গেট তৃণমূলের, রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই সে প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে।
শনিবারই বিজেপির বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার নতুন সভাপতির নামের তালিকা প্রকাশ হয়েছে। আর সেই তালিকা প্রকাশের পর বিজেপির হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ (WhatsApp Group) থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলেন বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পাঁচ বিধায়ক (MLA)। বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, গাইঘাটার বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর, হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার, রানাঘাট দক্ষিণের বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী ও কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়।
[আরও পড়ুন: যৌন নির্যাতনে অন্তঃসত্ত্বা নাবালিকা, গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে হাই কোর্টে বাবা-মা]
রবিবার মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি তথা তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “ওদের পাশ থেকে মতুয়ারা সরে যাচ্ছে বুঝতে পেরে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন। সুব্রত, শান্তনু ঠাকুররা তৃণমূলে আসলে ওয়েলকাম। যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদেরকে দলে নেন তাহলে একসঙ্গে কাজ করব। নিশ্চয়ই ভাল হবে।” প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদের দাবি, বিজেপি বিধায়কদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছাড়ার নেপথ্যে দু’টি কারণ রয়েছে। এক, তাঁরা বুঝতে পারছেন রাজ্যের বকেয়া পুরসভাগুলির ভোটে মোটেও ভাল ফল হবে না। দ্বিতীয়ত, তাঁরা বুঝে গিয়েছেন মতুয়াদের জন্য যদি কেউ কিছু করেন তবে তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদের আরও দাবি, ‘বিজেপির ছলাকলা’ ধরে ফেলার পর তাঁকে অনেকেই ফোন করছেন। তৃণমূলে ফেরার ইচ্ছাপ্রকাশও করেছেন। তবে দলে ফেরানো হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই নিতে পারেন।
প্রসঙ্গত, বাংলার মতুয়া ভোটব্যাংক নিজেদের দখলে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেইমতো গত নির্বাচনে মতুয়া শিবির থেকে বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু তাঁদের একটা বড় অংশেই এবার ‘বিদ্রোহে’র সুর। সূত্রের খবর, মতুয়াদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে ক্ষোভ মেটাতে আসরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Santanu Thakur)। ‘বিদ্রোহী’দের ঢাল করেই কি মতুয়া ভোট নিজেদের দখলে আনতে চাইছে তৃণমূল, রাজনৈতিক মহলে ঘুরপাক খাচ্ছে সে প্রশ্ন।