প্রণব সরকার, আগরতলা: ভোটের মরশুমে আটক পাক নাগরিক! বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার সাব্রুম থানার পুলিশ ওই যুবককে আটক করে। তার কাছে থাকা মোবাইল, ভারতীয় আধার কার্ড সহ বিভিন্ন কাগজপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়। সে আইএসআই চর কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ধৃতের নাম আয়ান আলম ওরফে আল আমিন (২৫)। জন্মস্থান পাকিস্তানের করাচি। বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায় সাব্রুমের জলেফা এলাকায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে এলাকাবাসী আটক করে খবর দেয় সাব্রুম থানার পুলিশকে। পুলিশ তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গোয়েন্দা কর্তারা তাকে টানা প্রায় চার থেকে পাঁচঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে। সাব্রুমের মহকুমা পুলিশ প্রশাসক নিত্যানন্দ সরকার জানায়, আগামিকাল তাকে আদালতে পেশ করা হবে।
[আরও পড়ুন: শুরু পালটা মার! ইরানে মিসাইল হামলা ইজরায়েলের, নিশানায় পরমাণু কেন্দ্র?]
জিজ্ঞাসাবাদে আয়ান জানায়, তার জন্ম পাকিস্তানে। বাবার বাড়ি বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মায়াপুরে। আড়াই-তিন দশক আগে অবৈধভাবে তারা পাকিস্তানে চলে যান। করাচিতে জন্ম হয় আয়ানের। ফের ২০১১ সালে আয়ানকে নিয়ে তাঁর বাবা চলে আসে বাংলাদেশ। কিন্তু তাঁর মা-সহ চার ভাই এবং চার বোন থেকে যায় পাকিস্তানে। কিছুদিন বাংলাদেশে থাকার পর পুনরায় বন্ধু-বান্ধবসহ আয়ান পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। দক্ষিণ ভারতের কেরলে গিয়ে অবৈধ ভারতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে সেখানে কাজ করত। এর পর সে চলে যায় দিল্লির নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিতে। দীর্ঘদিন দিল্লিতে থাকার পর চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আয়ান কাশ্মীর চলে যায়। লক্ষ্য ছিল সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে যাওয়া। কিন্তু সেই গুড়ে বালি। তাঁকে পুনরায় দিল্লিতে ফিরে আসতে হয়। দিল্লিতে নামতেই ১৫ মার্চ দিল্লি স্পেশাল ব্রাঞ্চ আটক করে আয়ানকে। তার দাবি, টানা একমাস জিজ্ঞাসাবাদের পর ১৫ এপ্রিল তাকে নাকি ছেড়ে দেওয়া হয়। বলা হয়, বাংলাদেশে ফিরে যেতে।
দিল্লি থেকেই আয়ান আগরতলা এবং বাংলাদেশের 'টাউট'দের নম্বর জোগার করে কথা বলে। এর পর ত্রিপুরাসুন্দরী এক্সপ্রেস ধরে চলে আসে আগরতলা। সেখান থেকে দশটার ট্রেনে আয়ান পাড়ি দেয় সাব্রুমের উদ্দেশ্যে। 'টাউট'দের সাথে পুনরায় কথা বলে। তারাই আয়ানকে তারা মনুবাজার স্টেশনে যেতে বলে। মনুবাজার যাওয়ার পথেই জলেফায় আটক হয়।