সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যাঁর কপালে চন্দনের ফোঁটা দিয়ে জমের দুয়ারে কাঁটা ফেলেছিলেন দিদি, সরকারি টাকা হাতাতে সেই দিদির কপালেই সিঁদুর দিলেন ভাই। উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) গণবিবাহের আসরে দুর্নীতির এহেন নমুনা দেখে কার্যত ‘থ’ সরকারি আধিকারিকরা। ‘কীর্তিমান’ ভাই-বোনের বিরুদ্ধে এফআইআর (FIR) দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ (Police)।
‘মুখ্যমন্ত্রী গণবিবাহ প্রকল্পে’ (Chief Minister Mass Marriage Scheme) কনেকে ৫১ হাজার টাকা দেয় উত্তরপ্রদেশ সরকার। সেই টাকা হাতাতে ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করেন লক্ষ্মীপুর ব্লকের কাজরি গ্রামের বাসিন্দা প্রীতি যাদব। এরপর সরকারের খাতায় বিয়ে দেখাতে নিজেরই ভাই কৃষ্ণের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেন তিনি। সরকারি পঞ্চায়েত আধিকারিকের উপস্থিতিতে রীতি মেনে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিয়ের ছবি তুলে সরকারের কাছে টাকার অনুমোদনের জন্য পাঠানো নয়। যদিও বাস্তবে দেখা যায়, প্রীতি ইতিমধ্যেই বিবাহিত। রমেশ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আগেই বিয়ে হয়েছে তাঁর। এহেন দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। স্থানীয় পুরন্দরপুর থানায় এই ভুয়ো বর-বধূর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন খোদ এডিও চন্দন পাণ্ডে। শুধু তাই নয়, এই ভুয়ো বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন কাজরি গ্রাম পঞ্চায়েতের সরকারি আধিকারিক মিলিন্দ চৌধুরী। প্রাথমিক তদন্তে তাঁর অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ইন্দ্রেশ ভারতী নামে আরও এক সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে।
[আরও পড়ুন: গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল হামাসের কমান্ডিং সেন্টার! ইজরায়েলের অভিযানে নিকেশ ২০ জঙ্গি]
‘গণবিবাহ’ প্রকল্পে বিয়ে পিছু ৫১ হাজার টাকা দিয়ে থাকে উত্তর প্রদেশ সরকার। এর মধ্যে ৩৫ হাজার টাকা পায় কনে। এছাড়া বিয়ের সরঞ্জাম কেনা এবং অনুষ্ঠানের জন্য দেওয়া হয় ১০ হাজার ও ৬ হাজার টাকা। এই সরকারি টাকা হাতাতে বেলাগাম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে উত্তরপ্রদেশের জেলায় জেলায়। কোথাও ১ থেকে ২ হাজার টাকায় বর ভাড়া করে হয়েছে বিয়ে, তো কোথাও আবার নিজের গলায় নিজেই মালা পরিয়েছে কনে। গত ২৫ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের বালিয়ায় এমনই ভুয়ো বিয়ের ভিডিও ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। এর পরই শুরু হয় বিতর্ক। সরকারি টাকা হাতাতে এবার প্রকাশ্যে এল ভাই-বোনের ভুয়ো বিয়ে।
[আরও পড়ুন: ভোটের মরশুমে ধাক্কা খাবে বিগ বাজেট ছবির ব্যবসা! কী বলছে টলিউড?]
এদিকে গণবিবাহে দুর্নীতির একের পর এক তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে যোগী সরকার। ইতিমধ্যেই ১৭ বর কনেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রতিটি বিয়ে খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের কমিটি। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ টাকা পাবে না।