অভিরূপ দাস: গল্প নয়, সত্যি। চিকিৎসার খরচের টাকা নেই। প্রোমোটার ডেকে বাড়ি বিক্রি করে দিল অসুস্থ রোগীর পরিবার। চিকিৎসার খরচ চালাতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়ার খবর নতুন নয়। কিন্তু চিকিৎসার খরচের জন্য নিজের একমাত্র মাথার ছাদটাও বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা এই প্রথম। করোনা (Corona Pandemic) আক্রান্ত ওই ব্যক্তির পরিবারের কথায়, “আজ থেকে আমরা ঠিকানাহীন।” ফলে কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও ওই ব্যক্তি ফিরে গিয়ে কোথায় উঠবেন সেটা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
জানা গিয়েছে, গত মে মাসে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন রাজারহাটের পূর্বাঞ্চলের বাসিন্দা আকাশ গুপ্ত। ৪২ বছরের ওই ব্যক্তি প্রথমে অসুস্থ হয়ে ভরতি ছিলেন কাঁকুরগাছির একটি নার্সিংহোমে। সেখানে দু’সপ্তাহে বিল হয় ৭ লক্ষ টাকা। কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। ক্রমশ কমতে থাকে অক্সিজেন স্যাচুরেশন। ফুসফুস কার্যত বিকল হয়ে পরে। হৃৎপিণ্ড কর্মক্ষমতা হারায়। এমতাবস্থায় ভরসা ছিল একমো মেশিন বা একস্ট্রা কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন। চিকিৎসকরা বলেন, আশিষবাবুর ফুসফুস কাজ করছে না। এদিকে শিরা থেকে দূষিত রক্ত প্রথমে হৃৎপিণ্ডের ডান দিকে যায়। তারপর তা পৌঁছয় ফুসফুসে। ফুসফুস সেই রক্তকে শুদ্ধ করে ফেরত পাঠায় হৃৎপিণ্ডের বাঁ দিকের অংশে। সেখান থেকে মহা ধমনীর মাধ্যমে তা ছড়িয়ে পড়ে গোটা শরীরে। বিকল ফুসফুস এই কাজ করতে পারছিল না।
[আরও পড়ুন: নিউটাউন এনকাউন্টার: নিহত গ্যাংস্টারের দেহ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত নয়, রায় আদালতের]
ফুসফুস ও হৃৎপিণ্ড দু’টিই কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় আশিসবাবুকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয়। সেখানে এ পর্যন্ত তাঁর চিকিৎসার খরচ ২২ লক্ষ টাকা। আপাতত একমো মেশিন ব্যবহার করে তাঁর শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। কতদিন আরও ওই মেশিনের ভরসায় থাকতে হবে জানেন না আশিসবাবুর পরিবার। কোভিডে বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসার খরচ বিপুল। কিন্তু তা জোগাতে বাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা বিরলতম। আশিসবাবুর পরিবার বলছেন, “আজ যদি ও সুস্থ হয়েও যায়, ওকে নিয়ে ফুটপাতে উঠতে হবে।”