সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের প্রতিবাদে নামা শত শত কৃষকের পাশে থাকতে তাঁদের পৌঁছে দিয়েছিলেন দিল্লি (Delhi) সীমানায়। নিজেও ছিলেন এক প্রতিবাদী। কিন্তু এই প্রতিবাদই কার্যত মৃত্যুদূত হয়ে নেমে এল পাঞ্জাবের বছর পঞ্চান্নর ব্যক্তি। শনিবার রাতে নিজের গাড়িতেই ঘুমোচ্ছিলেন জনক রাজ। সেসময় গাড়িতে আগুন লেগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হল তাঁর। কৃষক বিদ্রোহের (Farmers’ Protest) বলি হলেন প্রতিবাদী। অন্যদিকে, প্রতিবাদের আগুন জ্বলল দেশের আরেক প্রান্তেও। ওড়িশা বিধানসভার সামনে তিন প্রতিবাদী কৃষক গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। নিরাপত্তারক্ষীদের সহায়তায় তাঁরা রক্ষা পান।
জনক রাজ পেশায় ট্রাক্টর মেরামতকারী। বাড়ি পাঞ্জাবের (Punjab) বার্নালের ধানুলুয়া গ্রামে। কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনে তাঁর কী সুবিধা, কী অসুবিধা হবে – এতটা হয়ত বিশদে ভাবার অবকাশ পাননি। কিন্তু প্রতিবেশী কৃষকরা দল বেঁধে হাঁটছে প্রতিবাদ মিছিলে, হেঁটে চলেছে মাইলের পর মাইল। জুটছে পুলিশের লাঠি, জলকামান, কাঁদানে গ্যাসের অত্যাচার। তবু থামছে না কেউ। এসবের সঙ্গ লড়াই করেই পাঞ্জাব, হরিয়ানা থেকে সকলে ঠিক পৌঁছে গিয়েছেন দিল্লির দরবারে। জোরালো করেছেন তাঁদের প্রতিবাদ। এসব দেখে জনক রাজ নিজেও তাতে শামিল হবেন বলে ঠিক করেন। নিজের ট্রাক্টর নিয়ে চলে গিয়েছিলেন দিল্লিতে। কৃষক আন্দোলনে ব্যবহার করেছিলেন নিজের ট্রাক্টর।
[আরও পড়ুন: অমিত শাহের আলোচনার প্রস্তাব খারিজ, দিল্লি সীমানায় আন্দোলন চালিয়ে যাবেন কৃষকরা]
শনিবার রাতে দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার বাহাদুরপুরে নিজের গাড়ির ভিতরে ঘুমোচ্ছিলেন জনক রাজ। আচমকা তাঁর গাড়িতে আগুন লেগে যায়। আর ঘুমের মধ্যেই অগ্নিদগ্ধ হন প্রতিবাদী কৃষকদের এই সুহৃদ। প্রতিবাদ দমনে পুলিশের হাজারও অত্যাচার পেরিয়ে যিনি এগিয়ে গিয়েছিলেন অনেকটা, জীবনযুদ্ধে কোনও কিছুর কাছে হার না মানা মানুষটার জীবনটাই শেষ করে দিল দাউদাউ আগুন! তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছে শিরোমনি অকালি দল। এই আন্দোলনের জনক রাজের নাম অমর হয়ে রইল বলে মনে করছেন দলের নেতারা।
[আরও পড়ুন: পাখির চোখ একুশের ভোট, প্রধানমন্ত্রীর ‘মন কি বাতে’ বঙ্গ মণীষীদের জীবনদর্শন]
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের প্রতিবাদে ওড়িশায় আত্মাহুতি দিয়ে আন্দোলনের পথে হাঁটার মতো ঘটনা ঘটল। শুক্রবার কটকের তিন কৃষক বিধানসভার সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে এই আইন যাতে রাজ্যে লাগু করা না হয়, সেই দাবিতেই তাঁদের এই পদক্ষেপ বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন তিন কৃষক। যদিও নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁদের দূরে সরিয়ে নিয়ে যান।