shono
Advertisement

চাকরি নেই! ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েও চা বিক্রি, MA চাওয়ালির পর এবার B.Tech চাওয়ালা

৮০ শতাংশ নম্বর পেয়েও অমিল চাকরি।
Posted: 07:10 PM Jan 02, 2023Updated: 07:11 PM Jan 02, 2023

বাবুল হক, মালদহ: হাবড়ার পর মালদহ। এমএ পাস ইংলিশ চাওয়ালির পর এবার বিটেক পাস চাওয়ালা। ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে চায়ের দোকান খুললেন মালদহের কালিয়াচকের তরুণ আলমগীর খান। খান সাহেবের চায়ের দোকান মালদহ টাউন স্টেশনের রাস্তায়, একটি ভাড়াবাড়ির বারান্দায়। বন্ধুদের ডেকে ফিতে কেটে উদ্বোধনও করেন।

Advertisement

হাবড়া স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রবীন্দ্রভারতী মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দূরশিক্ষায় ইংলিশে ফাস্ট ক্লাস পেয়ে এমএ পাস টুকটুকি দাস চায়ের দোকান চালিয়ে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন। টুকটুকির মতোই মালদহের আলমগীর খানও চাকরির বহু চেষ্টা করেও আপাতত ব্যর্থ। চাকরির শিকে ছিড়েনি। টুকটুকির পথেই আলমগীর। তাঁদের ভাবনারই বাস্তবরূপ এই চায়ের দোকান। নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে চায়ের দোকানে নাম জুড়ে দিয়ে হয়তো বা বেকারত্বের ক্ষোভই তুলে ধরতে চেয়েছেন তাঁরা।

[আরও পড়ুন: ‘ধানে পোকা জন্মালে সমূলে বিনাশ করতে হবে’, দলকে বার্তা মমতার, সমালোচনা শুরু বিরোধীদের]

বি.টেক চা বিক্রেতা আলমগীর খান।

চাকরির কোনও জায়গা নেই। মনে হতাশা বাসা বাঁধতে শুরু করেছে। এমন অবস্থায় পরিবার চলবে কী করে? প্রশ্ন আলমগীরের। তবে তিনি কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলতে চেয়েছেন। বি.টেক আলমগীর বলেন, “চাকরি হবে না, সেটা বুঝতে পারছি। কেন্দ্রীয় সরকার যেমন বেকারত্ব নিয়ে উদাসীন, তেমনি রাজ্য সরকারও কোষাগার খালি করে ফেলেছে। চাকরি নেই। বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবা, ভাইবোনদের নিয়ে খাব কী? ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাউন্সিলিংয়ে গিয়ে চাকরি জুটেছে। কিন্তু মাইনে মাত্র দশ থেকে বারো হাজার টাকা। তা-ও গুজরাটে গিয়ে কাজ করতে হবে। নিজের খাব কী, আর বাড়িতেই বা কী পাঠাব? বাংলার ছেলেমেয়েদের এই সব সমস্যার কথা কেউ ভাবছেন না।”

চলছে চা বানানো।

 

মালদহের কালিয়াচক হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন আলমগীর খান। তারপর গনি খান ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ভরতি হন। সেখান থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা এবং বিটেক করেন। দু’টি ক্ষেত্রেই ৮০ শতাংশের বেশি নম্বর পান। কিন্তু বাবা-মা, ভাইবোনদের নিয়ে সংসার চালানোর কোনও সামর্থ নেই। চাকরির জন্য দৌড়ঝাঁপ করেও শিকে ছিড়েনি। বেসরকারি নার্সিংহোমে গিয়ে রাতদিন পরিশ্রম করে আট হাজারের বেশি সাম্মানিক পাননি। সংসারের খরচ কোত্থেকে আসবে? হতাশা গ্রাস করতে শুরু করে।

[আরও পড়ুন: বগটুই কাণ্ডে যুক্ত অনুব্রত? হাই কোর্টে জমা দেওয়া সিবিআইয়ের রিপোর্টে চাঞ্চল্য]

আলমগীর খানের চায়ের দোকান।

এমন পরিস্থিতিতে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নাট-বল্টু ছেড়ে চায়ের কাপ হাতে নেওয়া ছাড়া তাঁর কোনও উপায় ছিল না। একজন বন্ধুকে সঙ্গী করে মালদহ শহরের স্টেশন রোডে কানির মোড়ের কাছে চায়ের দোকান খুললেন আলমগীর। নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা জুড়ে দিয়ে সাইনবোর্ড-এ লিখলেন ‘বি.টেক চা ওয়ালা’। আলমগীরের কথায়, “এটাই নিঃশব্দ বিপ্লব।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement
toolbarHome ই পেপার toolbarup অলিম্পিক`২৪ toolbarvideo শোনো toolbarshorts রোববার