সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাবা ও ছেলে একই দলের হয়ে খেলছেন। ফুটবল তার সাক্ষী থেকেছে। দুটো হলুদ কার্ড দেখেও ফুটবলার মাঠে থেকে গেলেন। ফুটবল সেটাও দেখেছে। তবে ম্যাচ শুরুর কিছুক্ষণ আগে সমর্থকদের মাঠে ঢুকে প্রতিবাদ। না এমন বিরল ঘটনার সাক্ষী বোধহয় থাকেনি ফুটবল। রবিবার অবশ্য ঠিক সেটাই হল।
বহু দিন ধরেই ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের (Manchester United) মালিক জোয়েল ও আভরাম গ্লেজারের সঙ্গে সমর্থকদের ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে। এ দিন সেটা পূর্ণাঙ্গ দাবানলের আকার নিল। রবিবার ভারতীয় সময় ন’টায় প্রিমিয়ার লিগের হেভিওয়েট মহারণে লিভারপুলের মুখোমুখি হওয়ার কথা ছিল ম্যান ইউনাইটেডের। তবে ম্যাচ শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎই ম্যান ইউনাইটেডের ঘরের মাঠ ওল্ড ট্র্যাফোর্ড স্টেডিয়ামে ঢুকে পড়েন শ’খানেক ম্যান ইউনাইটেড ভক্ত। কয়েকজনের হাতে ব্যানার–‘জোয়েল আর আভরাম শুনে নাও, এই ক্লাব তোমাদের নয় আমাদের’। আবার কয়েকজন অক্লান্ত ভাবে চিৎকার করতে থাকেন, ‘ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড ভক্তদের আবেগ নিয়ে খেলার কোনও অধিকার নেই কারও।’ পুলিশ মধ্যস্থতার চেষ্টা করেন। করোনার মধ্যে ম্যান ইউনাইটেড সমর্থকরা যাতে ভিড় না করেন। তবে শুনলেন কে? যত সময় এগোতে থাকে ম্যান ইউনাইটেড ভক্তরা আরও বেশি আগ্রাসী মেজাজে প্রতিবাদ করতে থাকেন। মাঠ থেকে বারবার বেরোতে বলা হলেও কেউ শোনেননি। দাঁড়ান এখানেই শেষ নয়। ম্যান ইউনাইটেডের টিম হোটেল লাওরির সামনও জমায়েত করেন ক্ষুব্ধ ভক্তরা। যাঁরা ম্যান ইউনাইটেডের টিমবাসও আটকে দেন। ফুটবলারদের দিকে ইঙ্গিত করে শুধু সবাই বলতে থাকেন, ‘তোমরাও প্রতিবাদ করো। ক্লাবটাকে বাঁচাও।’ শেষমেশ সমর্থকদের ক্ষোভের জেরে ম্যান ইউনাইটেড বনাম লিভারপুল ম্যাচ পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় এফএ। যারা সরকারি বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দেয়, ‘ফুটবলারদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও ঝুঁকি নেওয়া যাবে না। তাই ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়া হল।”
[আরও পড়ুন: বড্ড অলস শুভমন, খারাপ ব্যাটিং নিয়ে KKR তারকাকে তীব্র কটাক্ষ পিটারসেনের]
প্রশ্ন হল মালিকদের বিরুদ্ধে সমর্থকদের এত রাগ কেন? মূলত দুটো কারণ বেরিয়ে আসছে। এক, বছরের পর বছর ক্লাব বড় ট্রফি জিততে না পারা। ইউনাইটেড ভক্তদের দাবি ক্লাবের মালিকরা ক্লাবকে ব্যবসার একটা জায়গা বানিয়ে দিয়েছেন। দল মাঠে ভুল করুক এমনটা তাঁরা চান না। তাঁরা শুধু মন দেন স্পনসরশিপ বা মার্চেন্ডাইসিংয়ের ব্যাপারে। দুই, সুপার লিগ। বিতর্কিত লিগের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাবের মধ্যে ছিল ম্যান ইউনাইটেডও। ক্লাবের সুপার লিগে যোগ দেওয়া দেখে স্তম্ভিত ছিলেন ভক্তরা। যাঁদের দাবি এমন লিগে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্লাবের ঐতিহ্যকে নষ্ট করছেন মালিকরা। সমর্থকদের এমন অভিনব প্রতিবাদকে সমর্থন জানালেন প্রাক্তন ফুটবলাররা। গ্যারি নেভিল যেমন বললেন, “এটা তো সবে শুরু। এরপর আরও অনেক কিছু দেখা বাকি গ্লেজারদের।” জেইমি ক্যারাঘার আবার বললেন, “হ্যাঁ আমি সমর্থন করছি ম্যান ইউনাইটেড ভক্তদের। ফুটবল ম্যাচ বাতিল হলেও অনেক জমে থাকা ক্ষোভের জন্যও ওরা এমন প্রতিবাদ করল।”