সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার আগে ফের বিতর্কের চূড়ায় কংগ্রেস নেতা মণিশংকর আইয়ার। পাকিস্তানের পর এবার চিন নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে বসলেন তিনি। যার জেরে রীতিমতো অস্বস্তিতে কংগ্রেস। ১৯৬২ সালে চিনা দখলদারিকে চিনের বিরুদ্ধে 'অভিযোগ' বলে উল্লেখ করেন মণিশংকর। তাঁর বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তেড়েফুড়ে আক্রমণে নামল বিজেপি।
মঙ্গলবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর কার্যকাল সম্পর্কিত এক বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মণিশংকর। সেখানেই তিনি বলেন, '১৯৬২ সালে চিন ভারত আক্রমণ করেছিল বলে অভিযোগ।' কংগ্রেস নেতার মন্তব্যের ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর সোশাল মিডিয়া পোস্টে সরব হন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। তিনি লেখেন, ১৯৬২ সালের চিনা দখলকদারিকে 'অভিযোগ' বলে আখ্যা দিচ্ছেন। এই ঘটনাকে নির্লজ্জ বলে কটাক্ষ করে তিনি লেখেন, 'এই চিনের জন্য নেহরু রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ ছেড়ে দেন। রাজীব গান্ধী চিনের থেকে অনুদান নেন। সোনিয়া গান্ধীর ইউপিএ সরকার চিনের জন্য ভারতের বাজার খুলে দিয়ে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা ক্ষতি করে। এখন মণিশঙ্কর আইয়ার চিনা দখলদারির ঘটনাটিকে ইতিহাসের পাতা থেকে মুছে দিতে চান। সেই সময় ভারতের ৩৮ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা চিন বেআইনি ভাবে দখল করেছিল। তার পরও চিনের প্রতি কংগ্রেসের এই ভালোবাসা কেন?'
[আরও পড়ুন: স্ত্রী-সন্তানদের কুড়ুলের কোপ, পরিবারের ৮ সদস্যকে খুন করে আত্মঘাতী যুবক!]
তবে নিজের বক্তব্যের ভুল বুঝতে পেরে এর পর ক্ষমা চেয়ে নেন গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ মণিশংকর। তিনি জানান, "আমি অভিযুক্ত শব্দটি ভুল ভাবে প্রয়োগ করেছিলাম। ওই মন্তব্যের জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।" এদিকে কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে হাত শিবির। আইয়ারের মন্তব্য দল সমর্থন করছে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। একইসঙ্গে চিনা হামলার কথা স্বীকার করে জানান, '১৯৬২ সালের ২০ অক্টোবর চিন ভারতের জমি দখল করেছিল। তবে ২০২০ সালের মে মাসেও লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশ হয়েছিল। আমাদের দেশের ২০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছিলেন। এর জেরে সীমান্তে স্থিতাবস্থা বদলেছে। তবে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী চিনকে ২০২০ সালের ১৯ জুনে ক্লিনচিট দিয়েছিলেন। যার ফলে আমাদের ২০০০ বর্গ কিমি জমিতে এখন আমাদের সেনার কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই।' এখানে মোদি তৎকালীন মন্তব্যও তুলে ধরে কংগ্রেস। যেখানে মোদিকে বলতে শোনা যায় 'না আমাদের সীমায় কেউ ঢুকে পড়েছিল, না কেউ এখনও ঢুকে বসে আছে, না আমাদের কোনও পোস্ট শত্রুপক্ষের দখলে আছে।'
[আরও পড়ুন: খারিজ উমর খালিদের জামিনের আর্জি, দিল্লি হিংসাকাণ্ডে জেলেই থাকবেন ছাত্রনেতা]
অবশ্য কংগ্রেস নেতা মণিশংকর আইয়ারের বিতর্কিত মন্তব্য এই প্রথমবার নয়, কিছুদিন আগেও পাকিস্তান নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি। যাকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয় বিজেপি। আইয়ার বলেছিলেন, “ভারত যদি পরমাণু শক্তিধর দেশ হয়, তাহলে পাকিস্তানও পরমাণু শক্তিধর দেশ। সরকারের উচিত পাকিস্তানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা করা। সেটা না করে পেশিশক্তি দেখিয়ে দুদেশের মধ্যে টানাপোড়েন বাড়াচ্ছে সরকার।” এখানেই থেমে থাকেননি প্রবীণ কংগ্রেস (Congress) নেতা। তাঁর বক্তব্য, “পাকিস্তানের হাতে পরমাণু বোমা আছে। যদি কোনও ‘পাগল’ সেটা আমাদের দেশে ফেলে দেয়, তাহলে কী হবে!”