শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ভোটের (Lok Sabha Elections 2024) মরশুমে আচমকা বোমা ফাটার শব্দ। বাইরে থেকে ছোঁড়া হয়েছে বোমা? নাকি মজুত ছিল বাড়িতে? এই নিয়ে জামুরিয়ার দুটি পরিবারের তরজা তুঙ্গে। বচসায় জড়াল সিপিএম-তৃণমূল-বিজেপিও। যদিও এই ঘটনায় কেউ আহত হননি।
অজয় নদের ধারে বীরভূম-জামুরিয়ার শেষ সীমানার গ্রাম বাগডিহা। বুধবার রাতে এই গ্রামেই শোনা যায় বোমার আওয়াজ। কেউ কেউ তীব্র লাল আলো ও ধোঁয়া দেখতে পান। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শীল ও গড়াইদের মধ্যে শুরু হয় বিবাদ। সেই বিবাদে লেগেছে রাজনীতির রং। শীল পরিবারের অভিযোগ, বুধবার রাতে কাজল গড়াইদের নির্মীয়মান ফাঁকা বাড়িতে হঠাৎ করেই তীব্র আওয়াজে বোমা ফাটে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় শীলবাড়ির শৌচালয় ও বাড়ির অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যখন এই ঘটনা ঘটে তখন শীলদের বাড়িতে কেউ ছিল না। রামনবমীর প্রসাদ খেতে বাইরে গিয়েছিলেন সবাই। বাড়িতে ছিল ১৪ বছরের রূপালি। আওয়াজ শুনতে পেয়ে ভয়ে বাইরে ছুটে আসে সে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যায় জামুরিয়া থানার পুলিশ। গড়াই বাড়ির সদস্যদের দাবি, যে বাড়িতে বোমা ফেটেছে সেই বাড়িটি নির্মীয়মান। সেখানে কেউ থাকে না। কোনও বাউন্ডারিও নেই। এমনকি দরজা জানালাও নেই। তারা থাকেন অন্য জায়গায়। ফলে তাদেরকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করে কেউ সেখানে বোমা রেখে দিয়ে আসতে পারে। হয়তো প্রচণ্ড গরমে সেই বোমা ফেটে গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোটে বেআইনিভাবে হস্তক্ষেপের চেষ্টা! রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কমিশনে তৃণমূল]
শীল পরিবারের অভিযোগ, গড়াইদের সঙ্গে তাদের পুরনো বিবাদ। দুর্গাপুজোর সময় অশান্তি হয়েছিল ডিজে বাজানোকে কেন্দ্র করে। তার পর থেকেই নাকি প্রাণে মেরে ফেলার বা দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হত। যদিও ভোটের আগে এই ঘটনায় তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএমও তরজায় জড়িয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, যে বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে সেই বাড়ির অন্যতম সদস্য কাজল গড়াই বিজেপি নেতা। পঞ্চায়েত ভোটে সমিতির হয়ে প্রার্থীও হয়েছিলেন। তৃণমূল জেলা সভাপতির অভিযোগ, ভোটের আগে সন্ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য কাজল গড়াই ওখানে বোমা মজুত করছিলেন। বিজেপি প্রার্থীর, অভিযোগ বিজেপি কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে তৃণমূল বোমা ছুড়েছে। বিজেপি কর্মীদের মেরে ফেলতেই এই ষড়যন্ত্র।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই পাড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের আধিপত্য। কাজল বিজেপি করে বলে তাকে ফাঁসানোর জন্য তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। সিপিএম প্রার্থীর কথায়, "তৃণমূল এবং বিজেপি একই কারখানার প্রোডাক্ট। শোরুম দুটি আলাদা। ভোট লুট করার জন্যই এসব কাণ্ড কারখানা করছে। সন্ত্রাস সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। ঘটনা তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।" নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবে তিন পক্ষই।