সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এল না স্ট্র্যান্ড রোডের নিউ কয়লাঘাটা বিল্ডিংয়ের আগুন (Fire)। দাউদাউ আগুন বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা অন্তত ৭, জানিয়েছেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। এর মধ্যে ৪ জন দমকল, ২ রেলকর্মী এবং ১ পুলিশ কর্মীও রয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে অসুস্থ অন্তত ১০ জন দমকলকর্মী। জানা যাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কার্যত যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আটকে থাকা দমকলকর্মীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। রাতের দিকে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, দমকল বিভাগের ডিজি জাভেদ শামিম। আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি। শোকাহত পরিবারের পাশে থাকবে সরকার, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে একথা জানিয়েছেন মন্ত্রী সুজিত বসু।
সোমবার সন্ধে ৬টার পর পূর্ব রেলের সদর দপ্তরের এই বিল্ডিংয়ে আগুন লাগে। ১৩ তলার আগুন হাওয়ায় মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় গোটা ভবনটিই চলে যায় আগুনের গ্রাসে। এখানে রেলের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের পাশাপাশি রয়েছে রিজার্ভেশনের মূল অফিসও। এই অগ্নিকাণ্ডের জেরে উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব রেলের সমস্ত বুকিং বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ সার্ভার রুম, লাইব্রেরিও। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কাজ শুরু হয়। গোটা বিল্ডিং অন্ধকারে ডুবে থাকায় কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। দমকলের অন্তত ২০টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। আনা হয় হাউইড্রলিক ল্যাডারও। কিন্তু তাতেও আগুনের লেলিহান শিখা আয়ত্তে আনা যায়নি। বরং আগুন নেভাতে গিয়ে দমকল কর্মী, পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। দমকলের অন্তত ৬ থেকে ৭ জন কর্মী লিফটে আটকে গিয়ে দম বন্ধ হয়ে অসুস্থ হন।
[আরও পড়ুন: বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড বড়বাজারে, আগুনের গ্রাসে পূর্ব রেলের সদর দপ্তর]
পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে উদ্বিগ্ন ফিরহাদ হাকিম, সুজিত বসু। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেননি কেউই। তবে আশঙ্কার কথাও শোনা গিয়েছে তাঁদের মুখে। ফিরহাদ হাকিমের কথায়, ”আমরা ১৩ তলা পর্যন্ত উঠতে পারিনি। ৬ তলা পর্যন্ত গিয়েছিলাম। উদ্ধারকারী দল গিয়েছে। লিফটে যারা আটকে রয়েছে, তাদের যতটা সম্ভব দ্রুত উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। এত অন্ধকার, তাই কাজে বাধা পাচ্ছে।” রাতের দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় একের পর এক অ্যাম্বুল্যান্স। আটকে থাকা কয়েকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রেলের ডেপুটি কমিশনারের ব্যক্তিগত দেহরক্ষীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। ১৩ তলা থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গোটা স্ট্র্যান্ড রোড কার্যত দুর্গে পরিণত হয়েছে। যদিও মৃত্যুর খবর অস্বীকার করেছেন পূর্ব রেলের জনসংযোগ আধিকারিক। তবে কীভাবে এত বড় আগুন লাগল, সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নয় দমকল বিভাগ।