সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বামন’ হয়েও চাঁদ ছুঁয়েছে ভারত। বিশ্বের বহু ধনী দেশকে পিছনে ফেলে চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করেছে চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3)। বিশ্বের প্রথম দেশে হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরু স্পর্শ করার অহঙ্কার অর্জন করেছে ইসরো (ISRO)। তৃতীয় চন্দ্রযানের সাফল্যের পর থেকে দেশে উৎসবের মেজাজ। ভারতের সাফল্যে শুভেচ্ছাবার্তা ভেসে আসছে অন্য দেশ থেকেও। বলা বাহুল্য, এই সাফল্য একদিনের না। অনেক মেধা ও পরিশ্রমের ফসল। যার মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার মহিয়সী বিজ্ঞানীরাও।
ইসরোর ১৬ হাজার কর্মীর মধ্যে ২৫ শতাংশ মহিলা। চন্দ্রযান ৩ অভিযানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন ৫৪ জন মহিলা বিজ্ঞানী। তাঁরা প্রমাণ করেছেন, সব মহিলা রাধে না, অনেকেই মহাকাশ বিজ্ঞানের মতো জটিল বিষয়ে গবেষণায় জীবন উৎসর্গ করেন। হোমি জাহাঙ্গির ভাবা, বিক্রম সারাভাই, এপিজে আবদুল কালামের মতোই ভারতগৌরব এই মহিয়সীরা। ৫৪ জন মহিলা বিজ্ঞানীর মধ্যে বিশেষভাবে নেতৃত্বে ছিলেন সাতজন। বাঙালির জন্য গৌরবের হল তাঁদের মধ্যে রয়েছেন এক বঙ্গললনাও। আসুন, তাঁদের সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক।
[আরও পড়ুন: ‘ঘৃণার কারখানা চালাচ্ছেন মোদি-শাহ’, উত্তরপ্রদেশে মুসলিম পড়ুয়ার নির্যাতন নিয়ে সরব তৃণমূল]
ভিআর ললিথম্বিকা
ইসরোর ‘অ্যাডভান্সড লঞ্চার টেকনোলজি’ বিশেষজ্ঞ। ১০০টিরও বেশি মিশনের অংশ। ইসরোতে কাজ করার আগে বিক্রম সারাভাই স্পেস সেন্টারের ডেপুটি ডিরেক্টর ছিলেন। ‘গগনযান’ অভিযানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ললিথম্বিকার। এই অভিযানের উদ্দেশ্য ২০২৪ সালে ভারতীয় মহাকাশচারীদের দূর মহাকাশে পাঠানো।
অনুরাধা টি কে
ভারতে প্রথম মহিলা বিজ্ঞানী, যিনি স্যাটেলাইট প্রজেক্ট ডিরেক্টর হন। অবসর নেওয়ার আগে ৩৪ বছর কাজ করেছেন ইসরোতে। তিনটি যোগাযোগ সহায়ক উপগ্রহ, যথাক্রমে জিস্যাট ৯, জিস্যাট ১৭ এবং জিস্যাট ১৮-এর উৎক্ষেপণে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
মৌমিতা দত্ত
পদর্থবিদ কলকাতার এই কন্যা যুক্ত ছিলেন চন্দ্রযান ১ অভিযানের সঙ্গে। ২০০৬ সালে আমদেবাদের ‘স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারে’ যোগ দেন। ‘মম’ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ‘মঙ্গলযান’ অভিযানে মৌমিতার অবদানের জন্য তাঁকে ইসরোর ‘টিম অফ এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়েছিল।
[আরও পড়ুন: মানবিক মোদি, বক্তৃতা থামিয়ে অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেন প্রধানমন্ত্রী]
ভানিতা মুথাইয়া
চন্দ্রযান ২ অভিযানের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ছিলেন। প্রজেক্ট মঙ্গলযানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও ছিলেন। জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার থেকে ধাপে ধাপে প্রজেক্ট ডিরেক্টরের মতো শীর্ষপদে বহাল হন ভানিতা। তিনিই ইসরোর প্রথম মহিলা প্রজেক্ট ডিরেক্টর। ২০০৬ সালে ‘সেরা মহিলা বিজ্ঞানী’ হিসেবে পান ‘অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া’র পুরস্কার।
ঋতু করিধাল
ইসরোর অন্যতম অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী। কাজ করছেন ১৯৯৭ সাল থেকে। মঙ্গলযানের সাফল্যের অন্যতম কারিগর। চন্দ্রযান ২-এর মিশন ডিরেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের কাছ থেকে ‘ইসরো ইয়ং সায়েন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড’ পান।
নন্দিনী হরিনাথ
২০ বছরের কর্মজীবনে ইসরোর ১৪টিরও বেশি অভিযানের অংশ ছিলেন। বর্তমানে তিনি ইসরোর প্রজেক্ট ম্যানেজার এবং মিশন ডিজাইনার। ইসরোর ‘মম’ (মার্স অরবিটার মিশন) অভিযান বা মঙ্গলযান অভিযানের ‘ডেপুটি অপারেশন ডিরেক্টর’ ছিলেন।
কল্পনা কে
চন্দ্রযান ৩-এর চন্দ্রপৃষ্ঠে নির্বিঘ্নে অবতরণের অন্যতম কারিগর। ল্যান্ডারে নকশা এবং প্রযুক্তির দিকটির দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন। মিশন মঙ্গলেরও অন্যতম কারিগর ছিলেন কল্পনা। ইসরোর চন্দ্রযান ২ অভিযানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন ভারত বিখ্যাত এই মহিলা বিজ্ঞানী।