অর্ণব আইচ: শিলং পাহাড়ের যানজট ছাড়বে কলকাতার মডেলে। তাই এবার কলকাতার ট্রাফিক পুলিশেরই সহযোগিতা চাইল মেঘালয় পুলিশ। শিলং থেকে মেঘালয় ট্রাফিক পুলিশের টিম এসে বৈঠক করল লালবাজারে। পরিদর্শন করল কলকাতা পুলিশের ট্রাফিক ব্যবস্থা। একইভাবে ঝাড়খণ্ড পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের আধিকারিকরাও ওই রাজ্য ট্রাফিক যানজট এড়াতে সাহায্য চেয়েছে কলকাতা পুলিশেরই।
এবিষয়ে লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, মেঘালয় (Meghalaya) ট্রাফিক পুলিশের টিম যখন কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তখন ট্রাফিক আধিকারিকরা একটু অবাকই হয়েছিলেন। কারণ, শিলং-সহ মেঘালয়ের প্রায় সব রাস্তাই পাহাড়ে। সেখানকার রাস্তায় গাড়ি চলাচল ও ট্রাফিক ব্যবস্থার সঙ্গে কলকাতার ট্রাফিকের অবস্থা বা যানজটের কারণেরও পার্থক্য রয়েছে। যদিও মেঘালয়ের পুলিশ আধিকারিকরা কলকাতার ট্রাফিক কর্তাদের জানান, ওই রাজ্য রাস্তাগুলো মূলত পাহাড়ে হলেও সেখানকার ট্রাফিক ব্যবস্থাকে উন্নত করতে কলকাতা পুলিশেরই সহযোগিতার প্রয়োজন। কারণ, শিলংয়ের অনেক রাস্তার সঙ্গে সমতলের রাস্তার মিল রয়েছে। গুয়াহাটি থেকে শিলং যাওয়ার পাহাড়ি রাস্তাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই রাস্তায় কখনও কখনও যানজট দেখা যায়। তার ফলে সমতল থেকে পাহাড়ে পৌঁছতে বেশ সময় লাগে।
[আরও পড়ুন: ‘আপনার অবদানেই শক্তিশালী দেশ’, আডবাণীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা মোদির]
আবার শিলং থেকে পর্যটকরা যে রাস্তায় ভ্রমণে যান, সেই রাস্তাগুলোর ট্রাফিক ব্যবস্থা যাতে মসৃণ থাকে, সেই ব্যাপারেও মেঘালয় পুলিশ জোর দেয়। শিলং ও মেঘালয়ে ক্রমে গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে মালবাহী গাড়ির সংখ্যাও। এমনও দেখা গিয়েছে যে, দিনে ১২ থেকে ১৫ ঘণ্টা পর্যন্ত শিলং ও তার আশপাশের অঞ্চলে মালবাহী গাড়ি যাতায়াত করার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। শিলংয়ে প্রবেশ ও বেরনোর মুখে অনেক সময়ই স্তব্ধ হয়ে যায় গাড়ির চলাচল। এই ধরনের সমস্যা থেকে বের হতে মেঘালয় পুলিশের অফিসাররা লালবাজারের ট্রাফিক আধিকারিকদের কাছে অত্যাধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা থেকে শুরু করে গাড়ির গতি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেন। ট্রাফিক লঙ্ঘনকারী গাড়ি ধরার জন্য কী কী ধরনের সিসিটিভি ব্যবহার করা হয়েছে, তাও তাঁরা খতিয়ে দেখেন।
[আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভার অনুমোদন ছাড়া বিনামূল্যে রেশনের ঘোষণা কীভাবে? মোদিকে প্রশ্ন কংগ্রেসের]
একইভাবে ঝাড়খণ্ড পুলিশের টিমও কলকাতায় এসে লালবাজারের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে। ঝাড়খণ্ড পুলিশও লালবাজারকে জানিয়েছে যে, রাঁচি-সহ ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন জায়গায় অনেক সময় যানজট সৃষ্টি হয়। হাইওয়ে ছাড়াও শহরগুলোতেও দেখা দেয় যানজট। কীভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থা মসৃণ করা যায়, তা জানতে তাঁরাও বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি, যা কলকাতা পুলিশ এখন ব্যবহার করছে, সেগুলি নিয়ে ঝাড়খণ্ড পুলিশ আলোচনা করে। মেঘালয় ও ঝাড়খণ্ড এই দুই রাজ্যের পুলিশই আলাদাভাবে একাধিকবার ট্রাফিক কন্ট্রোল পরিদর্শন করে কীভাবে শহরজুড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে। দুটি টিমই কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে শহরের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে দেখে। আরও কয়েকটি রাজ্যের বাহিনীর সদস্যরাও কলকাতায় এসে ট্রাফিক ব্যবস্থা দেখে ‘শিক্ষা’ নিতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।