রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: প্রতিদিন ৩০ টাকা দিলে তবেই ছেলের বাড়িতে মিলবে একবেলার খাবার! কিন্তু লকডাউনে নিত্য ৩০ টাকা উপার্জন অসম্ভব। ফলে শর্তপূরণও সম্ভব নয়, তাই ঘরের পরিবর্তে মহিষাদল রাজবাড়ির দালানই এখন ঠিকানা বৃদ্ধের।
দীর্ঘদিন ধরেই পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে বাস গঙ্গাধর সামন্তের। জীবনের প্রথম ভাগে সবকিছু স্বাভাবিক ছন্দে চললেও এখন যেন তাঁর গোটা দুনিয়াটাই পালটে গিয়েছে। বয়সের বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনযুদ্ধও যেন কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠেছে। লকডাউনে হারিয়েছে মাথার উপরের ছাদও। সন্তানরা থাকা সত্ত্বেও কেন এই দশা তাঁর? জানা গিয়েছে, মেয়ে ও ছেলের বিয়ে দেওয়ার পরই ছেলে নিদান দিয়েছিল যে তাঁর সংসারে একবেলা খেতে হলে নিয়মিত ৩০ টাকা দিতে হবে বৃদ্ধকে। কোনও উপায় না থাকায় তাতেই রাজি হয়েছিলেন গঙ্গাধরবাবু। উপার্জনের আশায় নিয়মিত আইসক্রিম, চকলেট নিয়ে হাজির হয়ে যেতেন বিভিন্ন স্কুলের সামনে। উপার্জনের পাশাপাশি কোনওদিন স্কুলের বাড়তি মিড-ডে মিল কোনওদিন আবার সহৃদয় কোনও ব্যক্তির অনুকুল্যে দুপুরের খাওয়া জুটে যেত। শর্ত অনুযায়ী রাতের আহার জুটত বাড়িতেই। এভাবে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিলেন গঙ্গাধরবাবু।
[আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গে পর্দাফাঁস নয়া জেএমবি মডিউলের, গ্রেপ্তার সালাউদ্দিন ঘনিষ্ঠ জঙ্গি]
কিন্তু বাদ সাধল লকডাউন। স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপার্জন বন্ধ। আর ৩০ টাকা ছাড়া ছেলের বাড়িতে খাবার তো জুটবেই না, মেলেনি থাকার জায়গাও। অগত্যা রাজবাড়ির দালানে আশ্রয় নিয়েছেন বৃদ্ধ। অসহায় বৃদ্ধ নজরে পড়তে এলাকাবাসীরা যা দিচ্ছেন, তাতেই কোনওমতে ভরছে পেট। কিন্তু এভাবে কতদিন? যদিও এখনও ছেলের প্রতি কোনও ক্ষোভ নেই গঙ্গারামবাবুর। ছেলের বিরুদ্ধে একটি শব্দ ব্যবহার করতেও রাজি নন তিনি। তবে বৃদ্ধের এই পরিণতি দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রতিবেশীরা।
[আরও পড়ুন: অশান্তির জেরে স্ত্রীকে খুন, ৩ বছরের মেয়েকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে আত্মঘাতী যুবক]
The post দু’মুঠো ভাতের দাম ৩০ টাকা! দিতে না পারায় বাবাকে বাড়ি থেকে তাড়াল ছেলে appeared first on Sangbad Pratidin.