সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পরিযায়ী শ্রমিকদের দুর্দশা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে লকডাউন। করোনা আবহে বাড়ি ফেরাটাই যেন তাঁদের কাছে হয়ে উঠেছিল বিলাসিতা। খাতাপত্রে ‘পর্যাপ্ত’ শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন চললেও সেখানে জায়গা পাওয়া লটারি জেতার সমান। এহেন সঙ্কটে বাড়ি ফিরতে শেষমেশ জীবনের শেষ সঞ্চয় দিয়ে একটি আস্ত গাড়িই কিনে ফেললেন লল্লন।
[আরও পড়ুন: আরও উর্ধ্বমুখী দেশের করোনা গ্রাফ, আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ২ লক্ষ ২৬ হাজার]
উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাসিন্দা লল্লন। কাজের সন্ধানে আরও পাঁচজনের মতোই পাড়ি দিয়েছিলেন গাজিয়াবাদে। রঙের কাজ করে বেশ দু’পয়সা আয়ও হচ্ছিল। একটু একটু করে কিছুটা টাকাও জমে উঠেছিল ব্যাংকের খাতায়। স্বপ্ন ছিল একদিন বাড়ি ফিরে স্বাধীনভাবে কিছু একটা করবেন। তবে সে গুড়ে বালি। সমস্ত পরিকল্পনায় জল ঢেলে দিল করোনা। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই কাজকর্ম বন্ধ। ফলে আয়ও নেই। এর মধ্যে করোনা আতঙ্ক। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও পরিবারকে নিয়ে শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে জায়গা জোটাতে পারেননি তিনি। শেষমেশ ব্যাংকে জমানো ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে একটি সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনে ফেলেন তিনি। ২৯ মে সেই গাড়ি চেপেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন লল্লন। ১৪ ঘণ্টা সফরে গোরক্ষপুর পৌঁছন পর দিন। তাঁরা সকলে এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন।
তবে সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে গাড়ি কেনায় কোনও খেদ নেই লল্লনের মনে। তাঁর বক্তব্য, অন্য গাড়ি বা বাসে ভিড়ের জন্য করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে। তাই গাড়ি কিনে ফেলেন তিনি। টাকা গেলেও পরিবার যে সুস্থ শরীরে গ্রামের নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে ফেরেছে এতেই খুশি তিনি। এই পরিযায়ী শ্রমিকের আশা, গোরক্ষপুরে তাঁর ঠিক কোনও না কোনও কাজ জুটে যাবে আর তা যদি হয়, তা হলে আর গাজিয়াবাদ ফিরবেন না বলেই ঠিক করেছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: করোনা আবহে শপিং মল, রেস্তরাঁয় মানতে হবে নতুন নিয়ম, জারি কেন্দ্রের নয়া নির্দেশিকা]
The post ঠাঁই হল না ট্রেনে, শেষ সঞ্চয় দিয়ে গাড়ি কিনে বাড়ি ফিরলেন পরিযায়ী শ্রমিক appeared first on Sangbad Pratidin.