বিক্রম রায়: দলের প্রতি ক্ষোভ যে তৈরি হয়েছে, তা বোঝা গিয়েছিল আগেই। বারবার সোশ্যাল মিডিয়ায় উগরে দিয়েছেন রাগ। দলনেতৃত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন তিনি। কখনও নাম করে আবার কখনও পরোক্ষে চড়িয়েছেন বিরোধিতার সুর। ছেড়ে দিয়েছিলেন দলের সমস্ত পদ। আর শেষমেশ শুক্রবারই গেরুয়া শিবিরে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান করেন মিহির গোস্বামী (Mihir Goswami)। আর তারপরের দিনই অমিত শাহের (Amit Shah) সঙ্গে দেখা করলেন তিনি। একগুচ্ছ দাবি সম্বলিত একটি দাবিপত্রও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে তুলে দিলেন।
তাঁর বক্তব্য, স্বাধীনতার পর এত বছর কেটে গেলেও উত্তরবঙ্গ একেবারেই অবহেলিত। তাই উত্তরবঙ্গকে (North Bengal) বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মিহির গোস্বামী। এছাড়াও সীমান্ত এলাকাগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথাও ওই দাবিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। জয়গাঁ-ভুটান সীমান্ত দিয়ে সোনা, গরু পাচারের মতো অবৈধ কাজ খুব সহজেই হয় বলেও অভিযোগ মিহিরবাবু। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে এলাকার নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ, ডোমজুড়ে ধুন্ধুমার]
উল্লেখ্য, শুক্রবার সকালে বিমানবন্দরে একটি ছবিতে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের (Nisith Pramanik) সঙ্গে দেখা যায় তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ ওই বিধায়ককে। গুঞ্জন শুরু হয়, সাংসদের সঙ্গে দিল্লি গিয়েছেন বিধায়ক। উদ্দেশ্য, জেপি নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাত। তখনই সকলের মনে বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হয়, শুক্রবার গেরুয়া শিবিরে যোগ দেবেন বিধায়ক। সন্ধে গড়াতে না গড়াতে সেই ধারণাতেই পড়ল সিলমোহর। দিল্লিতে গিয়ে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন কোচবিহার দক্ষিণের বিধায়ক। উল্লেখ্য, এদিনই তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও ইস্তফা দেন মিহিরবাবু। গেরুয়া শিবিরে যোগদানের সময় তিনি বলেন, “এটা আমার ধর্মযুদ্ধ। তৃণমূলের শাসনেও উত্তরবঙ্গ বঞ্চিত।” বঞ্চনা সহ্য করতে না পেরে দলবদলের সিদ্ধান্ত বলেও জানিয়েছিলেন মিহির গোস্বামী। দলবদলের ঠিক পরেরদিনই উত্তরবঙ্গকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার দাবি জানান তিনি। নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মিহির গোস্বামী আর এক মুহূর্ত সময়ও নষ্ট করতে চাইছেন না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।