সুকুমার সরকার, ঢাকা: ফের জেহাদিদের নিশানায় বইমেলা। এবার নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের পরিচয়ে চিঠি পাঠিয়ে বোমা হামলার হুমকি পর অমর একুশে বইমেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। একইসঙ্গে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনটি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাংলা অ্যাকাডেমি প্রাঙ্গনে প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে মাসব্যাপী বইমেলা ঘিরে জঙ্গি বা মৌলবাদী দলগুলির গাত্রদাহ নতুন নয়। অর্ধশত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই বই মেলায় অসাম্প্রদায়িক কবি-লেখকদের ওপর বারে বারে হামলা চালানো হয়েছে। এতে করে তাঁদের প্রাণ হারাতে হয়েছে।
বোমা হামলার হুমকি পর অমর একুশে বইমেলায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে বাংলা আ কাডেমি ও বইমেলা প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাড়তি সদস্য। রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মহম্মদ শহিদুল্লাহ বলেন, বইমেলায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। লেখক পাঠকদের শঙ্কার কোনও কারণ নেই। সবাইকে নির্ভয়ে মেলায় আসার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট এনিয়ে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: ফের খুন রোহিঙ্গা নেতা, বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে জেহাদিদের তাণ্ডব]
২০১৫ সালের বইমেলার একেবারে শেষ দিকে ২৬ ফেব্রুয়ারি আনসার আল ইসলাম-এর জঙ্গিরা এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছিল মুক্তমনা লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অভিজিৎ রায়কে। সঙ্গে থাকা স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও জখম হয়েছিলেন। হত্যাকাণ্ডটি সামনে দাঁড়িয়ে তদারকি করে জঙ্গি সংগঠনটির হোতা চাকরিচ্যুৎ মেজর জিয়া।
জেহাদিদের হাতেই ২০০৪ সালে খুন হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ। হত্যা মামলায় দোষী জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) চার জঙ্গিকে ফাঁসি দেওয়া হয়। এছাড়া, বই প্রকাশের কারণে জাগৃতি প্রকাশনীর মালিক ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যা করা হয়। এনিয়ে সাতজন ব্লগারকে খুন করা হয়েছে। সবার ক্ষেত্রেই হত্যার ধরন ছিল একই রকম। প্রত্যেককে ধারাল অস্ত্র দিয়ে ঘাড়, মাথা, চোয়াল ও বুক ক্ষতবিক্ষত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। ব্লগার অনন্ত বিজয় দাস ও নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয়কে হত্যার পর আনসার আল ইসলামের পক্ষ থেকে দায় স্বীকার করে বার্তা দেওয়া হয়।