স্টাফ রিপোর্টার: ফের বাজিশিল্পে অনিশ্চয়তার কালো ছায়া। রাজ্যের বৃহত্তম বাজি বাজার শহিদ মিনারে বসার অনুমতি দিচ্ছে না সেনা কর্তৃপক্ষ। স্বভাবতই কোথায় বাজি বিক্রি করা হবে তা নিয়ে শনিবার সকাল থেকেই তীব্র টানাপোড়েন শুরু হয়েছে বাজি প্রস্তুতকারক ও খুচরো বিক্রেতাদের মধ্যে। এরই মধ্যে রাজ্য সরকার কলকাতার চারটি পয়েন্টে বাজি বাজার বসার তড়িঘড়ি শুরুর ব্যবস্থা করছে। এই বাজারগুলি হবে- টালা পার্ক, বেহালা ময়দান, পাটুলি ও বিজয়গড়। শহিদ মিনারে যারা স্টল দিতেন তাঁদের টালা পার্ক ও বেহালায় বসার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। কিন্তু এরই মধ্যে বহু মানুষ চম্পাহাটি ও বেগমপুর এবং আক্রার নুঙ্গিতে বাজি কিনতে হাজির হচ্ছেন। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট দু’ঘণ্টা বাজি পোড়ানোর অনুমতি দিলেও মাত্রাছাড়া শব্দবাজি যাতে না ফাটে তা নিয়ে বহুতলের ছাদে এ বছর বাড়তি নজরদারি করবে কলকাতা পুলিশ।
[সাঁতরাগাছি কাণ্ডে রেলের বিরুদ্ধে তদন্ত করবে রাজ্যের বিশেষ কমিটি]
একইসঙ্গে বিশেষ টহলদারি ভ্যান ও কুইক রেসপন্স টিমও দীপাবলির ক’দিন রাস্তায় নামাচ্ছে লালবাজার। শহিদ মিনার লাগোয়া ময়দানে প্রতি বছর বাজির বিরাট পসরা বসে। এটাই কলকাতার সবচেয়ে বড় ও পুরনো বাজি বাজার। কালীপুজোর এক সপ্তাহ আগে থেকে দীপাবলি পর্যন্ত চলে এই বাজার। কিন্তু বাজার বসাতে ময়দানের মাঠের জন্য এবার এখনও অনুমতি না মেলায় পুলিশও বাজি বিক্রেতাদের পসরা নিয়ে বসার অনুমতি দিতে পারছে না। এভাবে অপেক্ষা করলে এবার বিক্রেতাদেরই ক্ষতি। সে কথা মাথায় রেখেই টালা পার্ক ও বেহালায় ময়দানের বাজি বিক্রেতাদের ভাগ করে বসানোর কথা ভাবা হয়েছে। সেই বাজার বসার কথা ১ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত।
সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বাজি বিক্রির উপর থেকে সবরকম নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে। জানিয়ে দিয়েছে, সন্ধ্যা ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বাজি পোড়ানো যাবে। শব্দ ও পরিবেশ দূষণের কথা মাথায় রেখেই এভাবে সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে কোর্ট। তাতে দেশজুড়ে বাজি বিক্রেতারা উল্লসিত। কিন্তু কলকাতায় সেনা বাজি বিক্রির জন্য ময়দানের অনুমোদন না দেওয়ায় তাদের কার্যত মাথায় হাত। কলকাতার এই অংশে বাজির বাজার সবচেয়ে পুরনো। এই অংশ থেকে বাজি মধ্য ও দক্ষিণ কলকাতার বিস্তীর্ণ অংশে ছড়িয়ে পড়ত। চলে যেত বড়বাজার, পার্ক সার্কাস, চাঁদনি চক, গড়িয়াহাট, বালিগঞ্জের বাজারে। চলত কলকাতার বড় অংশের ব্যবসা। কিন্তু এবার সেনার কাছে ময়দানের অনুমোদন না মেলায় সেই বাজারেই মন্দার আশঙ্কা করছেন বিক্রেতারা। বড়বাজারের এক ব্যবসায়ীর কথায়, “আমাদের এখনও অনুমতি দেওয়া হয়নি। কিছুই জানি না, এবার ব্যবসার কী হবে।” তিনি আরও জানাচ্ছেন, “অন্যান্যবার কম করে দশদিন আগে অনুমতি পাওয়া যেত। তাতে বাজারের কাঠামো তৈরি হয়ে যেত। ছয় বা সাতদিন আগে থেকে বাজার নিয়ে বসতেন ব্যবসায়ীরা। এবার তার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।” কলকাতা ও লাগোয়া পাঁচটি জায়গায় মূলত বাজার বসত। টালা পার্ক, ময়দান, পাটুলি, বিজয়গড় ও বেহালা। এর সঙ্গে বাজারের মূল মার্কেট বজবজ, নুঙ্গি থেকেও বিক্রি হয়ে থাকে বড় অংশের বাজি।
[শহরে ফের অটোচালকের দাদাগিরি, যুগলকে স্কুটি থেকে নামিয়ে হেনস্তা ও মারধর]
সুপ্রিম কোর্ট বাজি পোড়ানো নিয়ে রায় দেওয়ার পাশাপাশি অনলাইনে বাজি বিক্রিতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। কিন্তু কলকাতায় সেই রায় চওড়া হাসি ফোটাতে পারছে না ব্যবসায়ীদের মুখে। আগামী রবিবার টালা পার্কে বাজির ডেসিবল পরীক্ষার কাজ করবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।
The post শহিদ মিনারে বসার অনুমতি দিচ্ছে না সেনা, শহরের চার পয়েন্টে এবার বাজি বাজার appeared first on Sangbad Pratidin.